close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ঈদের আগের মাসে রেমিট্যান্সে চমক: মে মাসেই এসেছে ২৯৭ কোটি ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৩২% বেশি!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
চলতি অর্থবছরের মে মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৯৭ কোটি ডলার, যা একক মাস হিসেবে দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। প্রবাসীদের ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার বাড়ার পেছনে হুন্ডি বন্ধ এবং অর্থপাচার কমার বড় প্রভাব রয়েছে..

দুল আজহার পূর্ব মুহূর্তে প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহে রীতিমতো ইতিবাচক চমক দেখা গেছে। ২০২৫ সালের মে মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে একক মাস হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এ প্রবাহ ৩২ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই থেকে মে) প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে পাঠিয়েছেন মোট ২ হাজার ৭৫১ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ অঙ্ক ছিল ২ হাজার ১৩৭ কোটি ডলার। ফলে এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৬১৩ কোটি ডলার বা ২৮ দশমিক ৭ শতাংশ।

রেমিট্যান্স বৃদ্ধির পেছনে কারণ কী?

বৈধ উপায়ে টাকা পাঠাতে প্রবাসীরা এখন আগের চেয়ে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থা হুন্ডি প্রতিরোধে সক্রিয় পদক্ষেপ নেওয়ায় অবৈধ পথে অর্থপ্রেরণ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। একই সঙ্গে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিদের বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠাতে নানা সুবিধাও চালু করা হয়েছে। এসব পদক্ষেপের ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, “অর্থপাচার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা এবং হুন্ডিবান্ধব সিন্ডিকেট ভাঙতে সাম্প্রতিক সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজরদারি ও অভিযান বেশ কার্যকর হয়েছে। এর ফলেই প্রবাসী আয় এখন বৈধ পথে বাড়ছে।”

মার্চ মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স

চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২৫ সালের মার্চে, যার পরিমাণ ছিল ৩৩০ কোটি ডলার। অর্থাৎ, মে মাসের ২৯৭ কোটি ডলার ওই রেকর্ডের পরেই অবস্থান করছে।

প্রবণতা অনুযায়ী, ঈদ বা উৎসব কেন্দ্রিক সময়ে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর হার বেড়ে যায়। পরিবার-পরিজনকে উৎসবের সময় বেশি খরচ পাঠানোর প্রবণতা, বাজারে দাম বৃদ্ধির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সহায়তা এবং নানা সামাজিক দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে প্রবাসীরা এই সময় বাড়তি অর্থ পাঠান।

সামনের মাসগুলোতে প্রবাহ বাড়বে কিনা?

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হুন্ডি কার্যক্রম আরও নিয়ন্ত্রণে থাকলে এবং ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহারে প্রণোদনা অব্যাহত থাকলে সামনের মাসগুলোতেও রেমিট্যান্স প্রবাহ ইতিবাচক থাকবে। তবে রপ্তানি ও আমদানির ভারসাম্য, ডলারের বাজারদর এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির দিকেও নজর রাখতে হবে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে রেমিট্যান্স প্রবাহ শুধু বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডারই সমৃদ্ধ করে না, বরং বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি মোকাবেলায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

সরকারও রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের জন্য নগদ প্রণোদনাসহ বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে আসছে, যাতে তারা হুন্ডির ফাঁদে না পড়ে এবং নিরাপদ পথে অর্থ পাঠাতে উৎসাহিত হন।

প্রবাসীদের আয়ে ঈদের আগে দেখা গেছে অভূতপূর্ব উল্লম্ফন। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হুন্ডিবিরোধী ব্যবস্থা, ব্যাংকিং সুবিধা সহজীকরণ ও কর্মসংস্থানের নতুন পথ খোলাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে এখন পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবাহ সরকারের জন্য একটি বড় ইতিবাচক বার্তা হয়ে থাকলো।

לא נמצאו הערות