নিহত ব্যক্তির নাম মো. সাহেদ (৩৫), তিনি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় চান্দগাঁও থানা পুলিশ সাহেদের ছোট ভাই মো. জাহেদ (২৭) ও তার স্ত্রী তাসমিন বিনতে আসলাম ওহিকে (২৬) আটক করেছে।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব উদ্দিন বলেন, সাহেদ ও জাহেদ দুবাই থাকতেন। বছরখানেকের ব্যবধানে উভয়ে দেশে ফিরে এসে বেকার অবস্থায় ছিলেন। তাদের বাবা মারা গেছেন। আরেক ভাই, মা ও তার পরিবার নিয়ে দুবাইয়ে থাকেন। সাহেদ, জাহেদ ও তার স্ত্রী চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় একই বাসায় থাকতেন। কয়েকমাস আগে সাহেদের সঙ্গে তার স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়েছে।
তিনি বলেন, বুধবার রাত আনুমানিক ২টার দিকে একজন অ্যাম্বুলেন্স চালকের কল পেয়ে চান্দগাঁও থানা পুলিশের একটি টিম অভিযানে নামে। নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথার কাছাকাছি এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়। তল্লাশি চালিয়ে সেখানে
সাহেদের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর পালানোর সময় জাহেদ ও তার স্ত্রী তাসমিনকে আটক করা হয়। ওসি আফতাব উদ্দিন বলেন, প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারি জাহেদ ও তাসমিন বাসায় সারাদিন ঘুমান। রাতভর ইয়াবা সেবন করেন। ইয়াবা আসক্তি ছাড়াও পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে তাদের সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল সাহেদের।
তিনি বলেন, বুধবার সন্ধ্যার পর বাসায় তারা তিনজন ঝগড়া করেন। জাহেদ ও তার স্ত্রী মিলে বাসার আসবাবপত্রও ভাঙচুর করেন। ঝগড়া শেষে সাহেদ নিজ কক্ষে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। বুধবার গভীর রাতে জাহেদ ও তার স্ত্রী ওই কক্ষে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় সাহেদকে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে খুন করে।
খুনের পর জাহেদ একটি সিএনজি অটোরিকশা ডেকে আনে। অটোরিকশায় লাশ তুলে প্রথমে আবাসিক এলাকা থেকে বের করে নেন। এরপর একটি অ্যাম্বুলেন্স পেয়ে সেখানে লাশ তুলে নেন। অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে তাদের গ্রামের বাড়ি রাউজানের নোয়াপাড়ার দিকে রওনা দেয়। অ্যাম্বুলেন্সচালক হত্যার বিষয়টি বুঝতে পেরে কৌশলে থানায় জানায়। এরপর আমরা চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার এগিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি আটকাতে সক্ষম হই।
সাহেদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আটক দু’জনকে থানায় রাখা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে আফতাব উদ্দিন জানান।