close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

ই রা নি হা মলা য় ক্ষে পণা স্ত্র সংকটে ই সরা য়ে ল, ভে ঙে পড়ছে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
টানা ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ভেঙে পড়ছে ইসরায়েলের বহু প্রচারিত তিনস্তরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ব্যয়বহুল ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র দ্রুত ফুরিয়ে আসায় ভয়াবহ সঙ্কটে পড়েছে দেশটি। সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন—ইস..

ইসরায়েলকে ঘিরে ধীরে ধীরে এক ভয়াবহ সঙ্কট ঘনিয়ে আসছে। ইরান ও তার মিত্রদের লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইসরায়েলের বহু প্রচারিত ‘অভেদ্য’ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কার্যত জর্জরিত। কয়েক দিনের মধ্যে যেভাবে টানা হামলা চালানো হচ্ছে, তা শুধু ইসরায়েলের নিরাপত্তাকেই হুমকির মুখে ফেলেনি, বরং যুক্তরাষ্ট্রের মিসাইল মজুদেও রীতিমতো চাপ সৃষ্টি করেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই–এর তথ্য অনুযায়ী, ইরান এবং হিজবুল্লাহ ও হুতি বিদ্রোহীদের মতো মিত্র গোষ্ঠীগুলোর টানা ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণে ইসরায়েল বাধ্য হয়েছে তাদের তিন স্তরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে সক্রিয় রাখতে। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় রয়েছে—

  • আয়রন ডোম (Iron Dome): ছোট পাল্লার রকেট প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়।

  • ডেভিড’স স্লিং (David’s Sling): মাঝারি ও ভারী রকেট ঠেকাতে ব্যবহৃত হয়।

  • অ্যারো-২ ও অ্যারো-৩ (Arrow): বায়ুমণ্ডলের বাইরের ব্যালিস্টিক মিসাইল ঠেকাতে ব্যবহৃত হয়।

এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যতই আধুনিক হোক, তাদের কার্যকারিতা নির্ভর করে ব্যয়বহুল ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্রের সরবরাহের ওপর। আর সেখানেই এখন ভয়াবহ সঙ্কট। ইসরায়েল গত চারদিনে এত বড় পরিসরে এই সিস্টেম চালাতে বাধ্য হয়েছে যে— তাদের মজুদে থাকা মহামূল্যবান অ্যারো ও ডেভিড’স স্লিং ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রভাবশালী প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন, “এই ধারা অব্যাহত থাকলে শুধু ইসরায়েলের নয়, আমাদের (যুক্তরাষ্ট্রের) মিসাইল প্রতিরক্ষা মজুদও হুমকিতে পড়বে। প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল।”

ইরান ছুঁড়েছে ৩৭০টি ব্যালিস্টিক মিসাইল!

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৩ জুন থেকে শুরু করে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ইরানের দিক থেকে ইসরায়েলের দিকে ছোড়া হয়েছে প্রায় ৩৭০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এর পাশাপাশি হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুতি গোষ্ঠীর দিক থেকেও চলছে ড্রোন ও রকেট হামলা।

ইসরায়েল এতগুলো আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে যে ব্যয়বহুল ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে, তা দিন দিন ফুরিয়ে আসছে—যার ফলে প্রতিরক্ষায় একধরনের ভাঙন দেখা যাচ্ছে।

ড্যান ক্যালডওয়েল, যিনি একজন প্রাক্তন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা, বলেন—“এই ইন্টারসেপ্টরগুলো প্রচণ্ড ব্যয়বহুল। একে তো এর উৎপাদন সময়সাপেক্ষ, আবার বড় পরিসরে তা উৎপাদন করা খুব কঠিন। আমরা আগে থেকেই হুতিদের বিরুদ্ধে যে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছি, তাতেই অনেক মজুদ শেষ হয়ে গেছে।”

বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, পরিস্থিতি যদি এমনই থাকে, তাহলে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র— উভয়কেই শিগগিরই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা আরোপ করতে হবে। অর্থাৎ শুধু প্রয়োজনে ছোঁড়া হবে প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র, যেকোনো আক্রমণে নয়।

এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েল কঠিন সিদ্ধান্তের মুখে। তারা কি প্রতিরক্ষা সীমিত করবে, নাকি আগ্রাসী হামলায় পাল্টা যাবে? একদিকে মজুদ কমে আসছে, অন্যদিকে ইরান ও তার মিত্রদের আক্রমণ থামছে না।

বিশ্ব রাজনীতিতে এই সংঘাত দীর্ঘ হলে শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়— যুক্তরাষ্ট্রসহ পুরো পশ্চিমা জোটকেও নতুন করে প্রতিরক্ষা ও কূটনীতির ভারসাম্য খুঁজে নিতে হবে।

No comments found


News Card Generator