ই রা নে র আরেক প র মা ণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে ই স রা য়ে ল..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
তেহরানের মাঝখানে ইসরায়েলের গোপন হামলা, নিহত বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী সেদিঘি সাবের। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি ভয়ংকর মোড় নিচ্ছে।..

ইরানের রাষ্ট্রীয় ইংরেজি চ্যানেল প্রেস টিভি নিশ্চিত করেছে যে, রাজধানী তেহরানের কেন্দ্রস্থলে এক বিস্ময়কর গোপন অভিযানে এই হামলা চালানো হয়। ঘটনাটি ঘটে শহরের প্রধান দুই সড়ক ফেরদৌসি ও ভালি আসরের সংযোগস্থলে। এ সময় সাবের গাড়িতে অবস্থান করছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

হামলার ধরন ছিল একেবারেই পেশাদার এবং পরিকল্পিত। দ্রুত গতির একটি মোটরসাইকেলে করে এসে আততায়ী খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে সেদিঘি সাবেরকে। এরপর মুহূর্তেই এলাকা ত্যাগ করে তারা। নিরাপত্তা বাহিনী এসে ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে, তবে আততায়ীরা নিখোঁজ। প্রেস টিভি এই হামলার জন্য সরাসরি ইসরায়েলকে দায়ী করেছে।

এই হামলা শুরু হয়েছে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক অভিযানের অংশ হিসেবে। গত ১৩ জুন থেকে ইরানের অভ্যন্তরে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এখন পর্যন্ত এসব হামলায় ১০ জনের বেশি পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। শুধু বিজ্ঞানী নয়, ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কমান্ডারসহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই হত্যাকাণ্ড কেবল একটি ব্যক্তি হত্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে ধ্বংস করার এক সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টা। এটি শুধু তেহরানের নিরাপত্তার চরম ব্যর্থতার পরিচয়ই নয়, বরং ইসরায়েলি গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের অসীম ক্ষমতারও বার্তা দিচ্ছে।

ইরানের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিশোধের ঘোষণা না আসলেও, পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। প্রতিদিনই বাড়ছে সুরক্ষার মাত্রা, চেকপোস্ট, নজরদারি। ইরান সরকারের তরফে জানানো হয়েছে—এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ীদের শাস্তি অবশ্যই নিশ্চিত করা হবে।

এদিকে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা লাইভ প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, তেহরানের জনগণের মাঝে এখন উদ্বেগ আর আতঙ্ক বিরাজ করছে। কেউ জানে না, পরবর্তী টার্গেট কে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশেষ বাহিনী, বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কয়েকটি রাস্তা।

বিশ্ব রাজনীতিতে এই ঘটনা নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা এবং মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ইসরায়েল ও ইরানের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। কিন্তু এত সরাসরি হামলা ও টার্গেটেড কিলিং-এর ঘটনা কূটনৈতিক মহলে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি ইরান এর যোগ্য জবাব না দেয়, তবে এমন হামলা আরও বাড়বে। আর যদি ইরান পাল্টা আঘাত হানে, তাহলে পুরো মধ্যপ্রাচ্য এক ভয়ংকর যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাবে—যার পরিণতি হবে ভয়াবহ।

পরমাণু কর্মসূচি এখন শুধু বিজ্ঞান নয়, হয়ে উঠেছে যুদ্ধের ময়দান। এবং তেহরানের রাস্তায় পড়ে থাকা রক্তাক্ত বিজ্ঞানী সেদিঘি সাবের যেন তার নীরব সাক্ষ্য দিয়ে গেলেন—এই যুদ্ধে কেউই নিরাপদ নয়।

कोई टिप्पणी नहीं मिली


News Card Generator