ইরানের ছয় সামরিক ঘাঁটিতে একযোগে আঘাত হেনেছে ইসরায়েল। ভয়াবহ ড্রোন হামলায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অন্তত ১৫টি যুদ্ধবিমান, ধ্বংস হয়েছে বিমানবন্দরের রানওয়ে এবং ভূগর্ভস্থ বাংকার।
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে নতুন করে আলোচনায় এসেছে ইসরায়েলের এই সামরিক পদক্ষেপ। দেশটির সামরিক বাহিনী ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) জানায়, তারা ইরানের ছয়টি বিমানবন্দরে গভীর রাতে ড্রোন হামলা চালায়। এই হামলায় ইরানের বিমান বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে আইডিএফ।
একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে আইডিএফ জানায়,পশ্চিম, পূর্ব ও মধ্য ইরানের ছয়টি বিমানঘাঁটিতে সফলভাবে হামলা চালানো হয়েছে। এই অভিযানে ধ্বংস করা হয়েছে ১৫টি যুদ্ধবিমান, যার মধ্যে রয়েছে এফ-১৫ ও এফ-৫। এছাড়া একটি রিফুয়েলিং প্লেন ও একটি কোবরা অ্যাটাক হেলিকপ্টার ধ্বংস করা হয়।
আইডিএফ আরও জানায়,আমাদের লক্ষ্য ছিল ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ও বিমান হামলার সক্ষমতা ধ্বংস করা। টার্গেট করা হয় রানওয়ে, হ্যাঙ্গার এবং ভূগর্ভস্থ বাংকার। আমরা লক্ষ্যভেদে শতভাগ সফল হয়েছি।
তবে ইসরায়েল যে হামলা চালিয়েছে, তা স্পষ্টভাবে নিশ্চিত করলেও এই হামলার সময় ও নির্দিষ্ট অবস্থান প্রকাশ করেনি। এমনকি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও এ ঘটনার সময়কাল নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছে।
হামলার বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি ইরান। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বা বিমান বাহিনী থেকেও কোনো বিবৃতি আসেনি। ফলে হামলার সত্যতা ও ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত মাত্রা এখনও নিশ্চিত নয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন,এই হামলা সত্য হলে তা ইরান-ইসরায়েল সংঘাতকে সরাসরি যুদ্ধে পরিণত করতে পারে। এর পরিণতি গোটা মধ্যপ্রাচ্যে বিস্তৃত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরণের হামলার মাধ্যমে ইসরায়েল মূলত ইরানের প্রতিরক্ষা কাঠামোকে দুর্বল করতে চাচ্ছে। ইরান যদি পাল্টা জবাব দেয়, তবে পুরো অঞ্চলে যুদ্ধের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে।
এদিকে বিশ্ব শক্তিগুলো এই হামলার বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে। জাতিসংঘ বা যুক্তরাষ্ট্র থেকেও এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব নতুন কোনো ঘটনা নয়, তবে এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে দিল কিনা, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন। ইরানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না আসা পর্যন্ত ঘটনাটি ঘোলাটেই রয়ে গেছে, তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন উঠেছে নিশ্চিত।