ইরানের পরমাণু স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলার পর বিশ্বমঞ্চ যেন উত্তাল হয়ে উঠেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একে ‘সামরিক সাফল্য’ বলে আখ্যা দিলেও, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং ভয়াবহ উত্তেজনার সূচনা হিসেবে দেখছে। একদিকে যেমন ইসরায়েল সমর্থন জানিয়েছে, অন্যদিকে কড়া ভাষায় নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া, ইরান, ভেনেজুয়েলা, কিউবা, কাতারসহ একাধিক দেশ।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই হামলাকে ‘ইতিহাস বদলে দেওয়া পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “ট্রাম্প বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক শাসকদের বিপজ্জনক অস্ত্র থেকে বঞ্চিত করতে যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা ইতিহাস মনে রাখবে।”
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদের মারাত্মক লঙ্ঘন। ইরান জাতিসংঘ সনদের আত্মরক্ষার অধিকার অনুসারে সব ধরনের প্রতিরক্ষা পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।”
রাশিয়ার নিরাপত্তা কাউন্সিলের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেন, “ট্রাম্প শান্তির দূত হয়ে এসেছিলেন, কিন্তু এখন নতুন যুদ্ধের সূচনা করলেন। এই ধরনের সাফল্য তাকে কখনো শান্তির নোবেল জেতাতে পারবে না।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লায়েন বলেন, ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র পাবে না, তবে উত্তেজনা প্রশমনে এখন দরকার কূটনৈতিক আলোচনার পথ।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাঁ-নোয়েল বারো এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারও একই আহ্বান জানিয়েছেন—ইরান যেন আলোচনায় ফিরে আসে, আর এই সংকটের মীমাংসা হয় কূটনৈতিকভাবে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যে এই মুহূর্তে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে তা ভয়াবহ ও বিস্ফোরক। এটি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে বেসামরিক মানুষের ওপর বড় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।”
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা বলেন, “এই পরিস্থিতি এখনই থামানো না গেলে তা বিস্তৃত যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে।” একই সুরে কথা বলেছেন ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তায়ানিও।
ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল একে ‘গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধ’ বলে আখ্যা দিয়ে মার্কিন আগ্রাসনের অবসান দাবি করেছেন। কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ-কানেল বলেন, “এই হামলা মানবতার জন্য হুমকি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলা বিশ্ব রাজনীতিতে এক গভীর উত্তাপ সৃষ্টি করেছে। একদিকে পশ্চিমা শক্তির সামরিক মনোভাব, অন্যদিকে চীন-রাশিয়া জোটের বিরোধিতা—এই পরিস্থিতি নতুন কোনো বিশ্ব সংঘাতের জন্ম দিতে পারে। এখন দেখার বিষয়, এই অগ্নিসংযোগ বন্ধ হবে কূটনৈতিক আলোচনায়, নাকি আরও বিস্ফোরণ ঘটাবে মধ্যপ্রাচ্যের বুকে।
 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				 
			



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			