close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ই রা ন তার আ ত্ম র ক্ষা র অ ধি কার প্রয়োগ করছে, যা সম্পূর্ণ বৈ ধ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইরানের সাম্প্রতিক সামরিক পদক্ষেপকে বৈধ আত্মরক্ষা বলে স্বীকৃতি দিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন আলোড়ন তুলেছেন। তাঁর মতে, ইরান তার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যে পদক্ষেপ নিয়েছে..

মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনার মাঝে ইরানের সামরিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে যখন পশ্চিমা বিশ্ব নানা ধরনের মন্তব্য করছে, ঠিক তখনই এক ভিন্ন সুরে কথা বললেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আন্তর্জাতিক এক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পুতিন সাফ জানিয়ে দেন, “ইরান তার আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করছে এবং তা সম্পূর্ণ বৈধ ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী।”

পুতিনের এই মন্তব্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের নজর কেড়েছে। তাঁর বক্তব্য অনুসারে, কোনো সার্বভৌম রাষ্ট্র যদি নিজের জনগণ ও ভূখণ্ড রক্ষার্থে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তবে সেটি আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় আত্মরক্ষার অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। তিনি আরও বলেন, “আক্রমণাত্মক নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করাই একমাত্র উপায় নয়, বরং সেটি দায়িত্বও।”

এমন সময়ে পুতিনের এই বার্তা আসলো যখন মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। সাম্প্রতিক ইসরায়েলি ড্রোন হামলার পর ইরান পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যার ফলে একাধিক সামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ইরানের এই পদক্ষেপকে 'উস্কানিমূলক' বললেও রাশিয়া একেবারেই ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, পুতিনের এই অবস্থান শুধু কূটনৈতিক বার্তা নয়, বরং একটি জিও-পলিটিকাল স্ট্র্যাটেজি, যার মাধ্যমে রাশিয়া ইরানকে সমর্থন করে মধ্যপ্রাচ্যে নিজের প্রভাব বজায় রাখতে চাইছে। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রাশিয়া বর্তমানে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে। ফলে মধ্যপ্রাচ্য এবং বিশেষ করে ইরানের সঙ্গে তার কৌশলগত সম্পর্ক আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, প্রতিটি রাষ্ট্রের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। তবে, সেই অধিকার কতটা এবং কিভাবে প্রয়োগ করা যাবে, তা নিয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে বিতর্কের শেষ নেই। এই বিতর্কে পুতিন সরাসরি ইরানের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় আন্তর্জাতিক কূটনীতি নতুন মোড় নিচ্ছে।

বিশ্বজুড়ে ইসলামি রাষ্ট্রগুলোর নেতারা পুতিনের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে, এটি শুধু ইরানের নয়, বরং সকল মুসলিম রাষ্ট্রের পক্ষে এক সাহসী কণ্ঠস্বর। অপরদিকে, পশ্চিমা নেতারা এই বক্তব্যকে "চালাকি" ও "গণতন্ত্রবিরোধী শক্তির সম্মিলিত কৌশল" হিসেবে দেখছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে যদি এই উত্তেজনা আরও বাড়ে, তবে রাশিয়া-ইরান একযোগে নতুন জোট গঠন করতে পারে, যা ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য উদ্বেগের বিষয় হতে পারে। এমনকি চীনও এই জোটে তাদের সমর্থন জ্ঞাপন করতে পারে, কারণ চীনেরও স্বার্থ মধ্যপ্রাচ্যের জ্বালানি নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত।

অবশেষে বলা যায়, পুতিনের এ বক্তব্য শুধু একটি কূটনৈতিক ঘোষণাই নয়, বরং বিশ্ব রাজনীতির শক্তি ভারসাম্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের পূর্বাভাসও হতে পারে। ইরানের প্রতিরক্ষা কীভাবে বৈধ, আর পশ্চিমা দৃষ্টিতে কতটা উস্কানিমূলক — এই দ্বৈত বিতর্কের মাঝে, পুতিনের কণ্ঠ বিশ্বমঞ্চে এক নতুন বার্তা দিল।

कोई टिप्पणी नहीं मिली