close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ই রা ন-ই স রা য়ে ল যু দ্ধ ঘিরে বাংলাদেশে মহা সং কেত, অন্তর্বর্তী সরকার জ্বালানির দুঃস্বপ্নে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে ফেলেছে ভয়াবহ জ্বালানি সংকটে, বললেন গোলাম মাওলা রনি। তেল-এলএনজি সরবরাহ ঝুঁকিতে, নির্বাচনী প্রস্তুতিও মুখ থুবড়ে পড়ছে।..

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সাম্প্রতিক যুদ্ধ শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, এর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতেও। এই সংঘাত বাংলাদেশে চলমান অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য রীতিমতো এক ভয়াবহ সংকট তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য, বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও জনপ্রিয় কলাম লেখক গোলাম মাওলা রনি।

সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের অভিঘাত সরাসরি এসে পড়ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও প্রশাসনিক কাঠামোর ওপর। এর প্রভাবে তেলের দাম হু হু করে বাড়ছে, এবং কাতার থেকে এলএনজি সরবরাহ ঝুঁকির মুখে পড়েছে।”

রনি সরাসরি হুঁশিয়ার করে বলেন, “এই যুদ্ধ যদি দীর্ঘমেয়াদে গড়ায় এবং ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেয়, তাহলে বাংলাদেশ জ্বালানি সংকটে নিপতিত হবে। এই সংকট মোকাবিলার মতো অর্থনৈতিক প্রস্তুতি, প্রশাসনিক কাঠামো বা সরবরাহ চেইন বর্তমান সরকারের হাতে নেই।”

তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনার আমলে ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল আসত। ভারত সেটা নিত রাশিয়া বা ইরান থেকে। সেই কাঠামো এখনো চালু আছে কিনা, তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছে না। আগের মতো স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনার যে ব্যবস্থা ছিল, সেটাও ভেঙে পড়েছে। এসব কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ছিলেন সালমান এফ রহমান, বিপু গং এবং জ্বালানিমন্ত্রীর সিন্ডিকেট। এখন সেই সিন্ডিকেট আদৌ সচল কি না, তা অনিশ্চিত।

তার মতে, এই যুদ্ধের জেরে তৈরি হওয়া জ্বালানি সংকট সরকারকে এক ভয়ানক বিপদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। শুধু অর্থনীতি নয়, রাজনৈতিক রূপান্তরের কাজও থেমে যেতে পারে।

রনি বলেন, “সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়া, এনসিপিকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা এবং ২০২৫ সালের নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনাগুলো সবই এখন প্রশ্নের মুখে। যেসব মানুষ আশাবাদী ছিলেন, তারা এখন হতাশ। কারণ যুদ্ধের অভিঘাত সরকারকে কার্যত পঙ্গু করে দিচ্ছে।”

বিশেষভাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দিকেও তীব্র সমালোচনার তীর ছুঁড়েছেন রনি। তিনি বলেন, “আমেরিকা, ইসরায়েল কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভয় দেখিয়ে এখন আর কিছু হবে না। বাংলাদেশের জনগণকে ভয় দেখিয়ে বা চাপ দিয়ে কোনো লাভ হবে না। এখন ড. ইউনূসকে নিজের দক্ষতা ও নেতৃত্ব প্রমাণ করতে হবে।”

রনি স্পষ্টভাবে বলেন, “এই সময় আবেগ দিয়ে কিছুই হবে না। বাস্তব সংকট—বিশেষ করে তেলের মূল্যবৃদ্ধি, প্রশাসনিক জটিলতা এবং বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এবার ‘অরজিনাল’ চেহারায় প্রকাশ পাবে।”

তিনি আরও যোগ করেন, এটি এখনো যুদ্ধের শুরু মাত্র। যদি সংঘাত বিস্তার লাভ করে, তাহলে দক্ষিণ এশিয়ায় খাদ্য, জ্বালানি ও কূটনৈতিক বিপর্যয়ের স্রোত বইতে পারে। সেই স্রোতে বাংলাদেশ কতটা ভেসে যাবে, তা সময়ই বলবে।

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের জের ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থা যখন বিপর্যয়ের মুখে, তখন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য এটি এক কঠিন পরীক্ষা হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নির্বাচন আয়োজন, প্রশাসনিক সক্ষমতা—সব কিছুই আজ এক ভয়াবহ অচলাবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। গোলাম মাওলা রনির বিশ্লেষণ এ সংকটের ভয়াবহতাকে নতুনভাবে সামনে এনে দিয়েছে।

Комментариев нет


News Card Generator