close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

হঠাৎ বিমান হামলার সাইরেন বেজে উঠল ভারতে

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ভারতের আকাশে যুদ্ধের গন্ধ! পাকিস্তানের হামলার আশঙ্কায় হরিয়ানার আম্বালা জুড়ে সাইরেনের শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শহরবাসীদের ঘরবন্দি করে জারি করা হয় ব্ল্যাকআউট। সীমান্তে চলছে ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধ, প্রাণহানির..

উপমহাদেশ যেন ফিরে গেছে ১৯৭১ সালের যুদ্ধকালীন মুহূর্তে। কেবল পার্থক্য—এবার দুই দেশের হাতেই রয়েছে পারমাণবিক অস্ত্র। আর সেই ভয়াবহ উত্তেজনারই সর্বশেষ ধাপে ভারতীয় শহর আম্বালায় বেজে উঠেছে বিমান হামলার সাইরেন।

৯ মে (শুক্রবার) কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের আম্বালা শহরে হঠাৎ বিমান হামলার সাইরেন বেজে ওঠে। পাকিস্তান থেকে আসা সম্ভাব্য হামলার শঙ্কায় ভারতের বিমান বাহিনী সতর্কতা জারি করে। সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকদের নির্দেশ দেওয়া হয় ঘরের ভিতরে থাকতে এবং জানালা কিংবা বারান্দা থেকে দূরে থাকতে।

 রাতভর ব্ল্যাকআউট, নাগরিকদের ‘বন্দি’ থাকার আহ্বান

পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত সম্পূর্ণ ব্ল্যাকআউট ঘোষণা করে স্থানীয় প্রশাসন। শহরের সমস্ত আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়, যাতে আকাশপথে হামলার ঝুঁকি কমানো যায়। এক ভয়াবহ মানসিক চাপে রাত কাটান আম্বালাবাসীরা।

 উত্তেজনার সূত্রপাত—কাশ্মীর হামলা

উত্তেজনার সূত্রপাত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে এক হামলার মধ্য দিয়ে। এতে ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে। যদিও ইসলামাবাদ এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এবং আন্তর্জাতিক স্বচ্ছ তদন্তের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু ভারতের প্রতিক্রিয়া ছিল অত্যন্ত কড়া।

আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়। পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশে ফিরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় সব ধরনের ভিসা। এমনকি সিন্ধু নদীর পানিবণ্টন চুক্তিও স্থগিত করে ভারত।

পাল্টা চাল পাকিস্তানের

ভারতের এসব পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও নেয় সমানতালে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা। ইসলামাবাদ ঘোষণা করে, সিমলা চুক্তি স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভারতীয় বিমানের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা নিষিদ্ধ ঘোষণা, এবং সব ধরনের বাণিজ্য সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার কথা জানায়।

 ছায়াযুদ্ধ নয়, এবার সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

দুই দেশের এই ঠান্ডা যুদ্ধ সরাসরি রক্তক্ষয়ী সংঘাতে রূপ নেয় ৬ মে। সেদিন ভারত মধ্যরাতে পাকিস্তান অধিকৃত আজাদ কাশ্মিরে অন্তত ৯টি স্থানে একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যাতে ১০০ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করে দিল্লি।

পাল্টা জবাবে, পাকিস্তান সীমান্তে ব্যাপক গুলিবর্ষণ চালায় এবং ৫০ ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার কথা জানায়। এর একদিন পর, ৮ মে রাতে পাকিস্তান ভারতের একাধিক শহরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় বলে খবর পাওয়া গেছে।

 কূটনীতিকরা সতর্ক করছেন: পরিস্থিতি অনিয়ন্ত্রিত হলে ফল হবে ভয়াবহ

বিশ্লেষক ও কূটনীতিকদের মতে, ভারত এখনো পর্যন্ত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কাশ্মীর হামলার ‘অবিসংবাদিত প্রমাণ’ উপস্থাপন করতে পারেনি। কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে উভয় দেশের ক্ষেপণাস্ত্র চালনা এবং পারমাণবিক হুমকি উপমহাদেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে পারে।

 বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ

বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলেও ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি করেছে। জাতিসংঘ থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন—সবাই চাইছে যুদ্ধ এড়াতে দুই দেশ যেন আলোচনায় বসে। তবে যেভাবে পাল্টাপাল্টি আক্রমণ চলছে, তাতে এখন প্রশ্ন—এই ‘সাইরেন’ কেবল সতর্কতা, নাকি যুদ্ধের অঘোষিত সূচনা?


ভারত-পাকিস্তানের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে একটি ভুল হিসাব বা ভুল বোঝাবুঝিও হয়ে উঠতে পারে ভয়ঙ্কর পারমাণবিক সংঘাতের কারণ। এখন সময় কূটনৈতিক বুদ্ধিমত্তার পরীক্ষার। নইলে পুরো উপমহাদেশই হয়তো সাক্ষী হবে এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের।

Nenhum comentário encontrado