close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

হিমায়িত বরফ গলতে শুরু: পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে ঢাকার উদ্যোগ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক শীতলতা কাটিয়ে এবার পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে নতুন বার্তা দিলেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা। দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা উন্মোচনের লক্ষ..

দীর্ঘ ১৫ বছর পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো ঢাকায়। আর এই ঐতিহাসিক মুহূর্তেই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি স্পষ্ট করে দেন—“কিছু বাধা আছে ঠিকই, কিন্তু আমাদের এগিয়ে যেতে হবে, সেই বাধা অতিক্রম করে।”

এ সময় তিনি কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদারের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “আমরা অনেকদিন ধরে একে অপরকে মিস করেছি। সম্পর্ক হিমায়িত ছিল, সেটি এখন গলতে শুরু করেছে। আমাদের সেই জমাট বরফ ভেঙে সামনে এগোতে হবে।”

এই বৈঠকটি এমন এক সময় হচ্ছে যখন বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে দেশগুলো নিজেদের মধ্যে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র খুঁজে নিচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে দুই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের ও পাকিস্তানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ এ সময় অতীতের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “আমাদের বিশাল একটি আঞ্চলিক বাজার রয়েছে, যা এখনো আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারিনি। আমরা বারবার সুযোগ হারাতে পারি না।”

তিনি দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে ব্যবসায়িক যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তার মতে, নিয়মিত ব্যবসায়ী পর্যায়ের সফর, বিটুবি যোগাযোগ ও পরস্পরের মধ্যে সফর বিনিময় হলে সহযোগিতা আরও গতি পাবে।

এরই মধ্যে ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফপিসিসিআই-এর একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করেছে এবং দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই-এর সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। এটি দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক পুনর্গঠনের একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

আমনা বালুচ আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এপ্রিলের শেষ দিকে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দারের বাংলাদেশ সফর দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্তরে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে।

অন্যদিকে, অধ্যাপক ড. ইউনূস বলেন, তিনি বরাবরই প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের পক্ষে ছিলেন। বিশেষ করে সার্ক কাঠামোর ভেতর যৌথ কার্যক্রম ও আঞ্চলিক উন্নয়নে সহযোগিতা তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে আরও বেশি করে যুব বিনিময়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আদান-প্রদান ও বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনা হওয়া উচিত। এতে জনগণের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়বে।”

তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে নিউইয়র্কে ও ডিসেম্বর মাসে ডি-৮ সম্মেলনের ফাঁকে কায়রোতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সঙ্গে তাঁর বৈঠক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অগ্রগতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

প্রধান উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ভবিষ্যতে সার্ক, ওআইসি ও ডি-৮-এর মতো আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক ফোরামে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।

Không có bình luận nào được tìm thấy


News Card Generator