জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মূখ্য সংগঠন সারজিস আলম বলেছেন, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর। এখান থেকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ হলেও এখানকার রাস্তা ঘাটের বেহাল অবস্থা কেন? হিলির রাস্তা হবে দেশের সেরা রাস্তা অথচ হিলি রাস্তায় গাড়িতে চড়লে পাকস্থলী উঠে বুকে একবার নিচে। গাড়ির চাকা একবার ডানে যায় তো একবার বামে। এতো বড় মাপের একটি স্থলবন্দরের স্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেন দাঁড়ায় না। বিগত দিনে হিলির উন্নয়নের জন্য যতটুকু বরাদ্দ ছিলো সেটি দেওয়া হয়েছে কি না। গত ১৭ বছর উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে বাংলাদেশ ডায়লগ দিয়ে হিলি স্থলবন্দরের উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা শোষন করা হয়েছে। আমরা আপনাদের অভাব ও না পাওয়ার কথাগুলো শুনতে এবং সচক্ষে দেখার জন্য জেলায় জেলায় আমাদের এই সফর। হিলি স্থলবন্দরে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করে। শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক পাচ্ছে না।
মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুর আড়াইটায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পক্ষে দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলি স্থলবন্দরের চারমাথা মোড়ে পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম আরো বলেন, আগামী দিনে নতুন বাংলাদেশ গড়তে মার্কা দেখে নয়, ভাল মানুষকে সমর্থন দিবেন। কোন ব্যাক্তি বা দলের অন্ধভক্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। আগামী দিনে দেশ ও আপনার এলাকায় কারা নেতৃত্ব দেবে সেই ভাল মানুষকে বেছে নিতে হবে। খারাপ মানুষ গুলোকে বর্জন করতে হবে। তাহলে দেখবেন আমাদের নতুন বাংলাদেশ ভালো মানুষের হাতে চলে গেছে। আবার পুনরায় যদি খারাপ মানুষ গুলোকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বেছে নেন তাহলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কোন মূল্য থাকবে। ভালো মানুষ যে দলের হোক বেচে নিবেন। আপনাদের যদি এনসিপির নেতাদের ভালো মনে হয় তাহলে এনসিপিকে বেঁছে নিবেন। আর ভালো না হলে বাদ দিয়ে দিবেন। আমাদের দলের কেউ যদি অন্যায় করে থাকলে তাকে মুখের উপর বলে দিবেন। শুধু বলবো ভালো মানুষ চাই, দেশ পরিচালনার জন্য। তিনি আরো বলেন, খুনি হাসিনাসহ ফ্যাসিস্ট সরকারের চেয়ে বড় দূর্নীতিবাজ ও শোষক বাংলার মাটিতে কেউ ছিলো না। আমরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পরে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে তারা। আমরা আগামীর বাংলাদেশ দুর্নীতিমুক্ত দেখতে চাই। নেতা হতে বড় কোন ডিগ্রি বা সার্টিফিকেট লাগে না। দরকার হয় সাধারণ মানুষের ভাষা বুঝতে এবং শ্রমিকদের দুঃখ কষ্ট বুঝতে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জুলাই ২০২৪ গণঅভ্যুত্থান কেবল একটি ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধেই বিজয় নয়, এটি আমাদের ভবিষ্যৎ নির্মাণেরও শপথ। চলুন আমরা একসাথে, হাতে হাত রেখে, এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলি যেখানে প্রতিটি নাগরিকের কণ্ঠস্বর প্রতিধ্বনিত হবে, যেখানে ন্যায় প্রতিষ্ঠা, মানুষের অধিকারের সংগ্রামই হবে রাজনীতির অন্যতম লক্ষ্য। যেখানে সাম্য ও মানবিক মর্যাদা হবে রাষ্ট্রের ভিত্তি। এখনই সময় নতুন স্বপ্ন দেখার, নতুন পথচলার এবং একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার! আশা করি, এই নতুন বাংলাদেশ গড়ায় আমরা আপনাদের পাশে পাবো।
এ সময় এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, ড.আতিক মুজাহিদ উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, আবু সাঈদ লিওন, মিথুন আলী নাছের খান, তানভীর রেজা তন্ময় সহ দিনাজপুর জেলা ও হাকিমপুর উপজেলার এনসিপির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।