close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

হেফাজত ও চরমোনাই স্টেক হোল্ডারদের প্রতিনিধি রাখার অনুরোধ করছি- পিনাকী..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নাগরিক কোয়ালিশনের আলোচনায় ইসলামী ঘরানার হেফাজত ও চরমোনাই মতবাদের প্রতিনিধিদের যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্লেষক পিনাকী ভট্টাচার্য। তার মতে, এই গোষ্ঠীগুলো দেশের একটি বড় অংশের মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক..

নাগরিক রাজনীতিতে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন গোষ্ঠী ও চিন্তাশীল ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত "নাগরিক কোয়ালিশন" যদি দেশের প্রকৃত বাস্তবতাকে ধারণ করতে চায়, তাহলে তাদের আগামী বৈঠকে হেফাজতে ইসলাম ও চরমোনাইয়ের রাজনৈতিক ধারার প্রতিনিধিদের যুক্ত করা উচিত — এমন মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সমাজচিন্তক পিনাকী ভট্টাচার্য।

রবিবার (১১ মে) দুপুরে নিজের ব্যক্তিগত ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে একটি পোস্টে পিনাকী ভট্টাচার্য এ আহ্বান জানান। সেখানে তিনি বলেন, “নাগরিক কোয়ালিশনের পরবর্তী বৈঠকে হেফাজত ও চরমোনাইসহ বাকি স্টেক হোল্ডারদের প্রতিনিধি রাখার অনুরোধ করছি। উনারা নাগরিক সমাজের একটি বড় অংশের প্রতিনিধিত্ব করেন।”

তার এ বক্তব্য দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে সাড়া ফেলে দেয়। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—রাজনৈতিক এবং আদর্শিকভাবে নাগরিক কোয়ালিশনের সঙ্গে হেফাজত বা চরমোনাই মতবাদের অবস্থান কি আদৌ সামঞ্জস্যপূর্ণ? অন্যদিকে, একটি বড় অংশ পিনাকীর মন্তব্যকে সময়োপযোগী এবং বাস্তববাদী বলেও উল্লেখ করেছেন।

হেফাজত ও চরমোনাই: অবহেলিত কিন্তু প্রভাবশালী ভোটব্যাংক

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে ইসলামি সংগঠনগুলোর ভূমিকা অনস্বীকার্য। বিশেষ করে গ্রামীণ ও উপ-শহরীয় এলাকায় হেফাজত ও চরমোনাই পন্থীদের উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। তাদের বাদ দিলে রাজনৈতিক ফ্রেমওয়ার্ক অসম্পূর্ণ থেকে যায় — এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

পিনাকী ভট্টাচার্য এ বিষয়ে বলেন, “যারা নাগরিক সমাজের নামে কেবল শহুরে, প্রগতিশীল বা পশ্চিমা ঘরানার প্রতিনিধিদের জায়গা দিচ্ছেন, তারা অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাংলাদেশি বাস্তবতাকে অস্বীকার করছেন। এটি কেবল একটি রাজনৈতিক ভুল নয়, বরং সামাজিক বিচ্ছিন্নতার সূচনা।”

পিনাকীর বক্তব্য কি নতুন কোনো সমীকরণ তৈরি করছে?

বিগত এক দশকে পিনাকী ভট্টাচার্য নিজেকে একজন স্পষ্টভাষী সমালোচক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের নানা কর্মকাণ্ড ও নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছেন তিনি। তার সাম্প্রতিক এই মন্তব্য অনেকের কাছে একটি কৌশলগত রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে প্রতিভাত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নাগরিক রাজনীতিতে ইসলামপন্থীদের অন্তর্ভুক্তি বিষয়ে পিনাকীর অবস্থান ভবিষ্যতের রাজনৈতিক সংলাপ ও জোট গঠনে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।

নাগরিক কোয়ালিশনের সামনে চ্যালেঞ্জ: অন্তর্ভুক্তিমূলক না এলিটিস্ট?

নাগরিক কোয়ালিশন বর্তমানে দেশের গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও স্বচ্ছ নির্বাচন প্রশ্নে সোচ্চার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে। তবে তাদের মূল সমালোচনা হচ্ছে—এই প্ল্যাটফর্মে শহরকেন্দ্রিক, উচ্চশিক্ষিত, ও কথিত 'সুশীল সমাজ' এর প্রতিনিধিদেরই বেশি আধিপত্য। ফলে বাস্তব মাঠ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ অনুপস্থিত।

এই প্রেক্ষাপটে পিনাকী ভট্টাচার্যের আহ্বান নাগরিক কোয়ালিশনের জন্য একটি আত্মপর্যালোচনার সুযোগ হয়ে উঠতে পারে। তারা যদি সত্যিই জাতীয় সংলাপ ও ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র কাঠামো নিয়ে ভাবতে চায়, তাহলে সমাজের সকল মত ও শ্রেণিকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে—তা সে যতই বিতর্কিত হোক না কেন।

 পিনাকীর প্রস্তাব গ্রহণ না করলে কী ঝুঁকি?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নাগরিক কোয়ালিশন যদি হেফাজত ও চরমোনাই মতবাদের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত না করে, তবে তা একটি অংশবিশেষের কোয়ালিশন হিসেবেই সীমিত থাকবে। অন্যদিকে, পিনাকীর প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে একদিকে যেমন জোটটি বৃহত্তর জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী হবে, অন্যদিকে রাজনৈতিক কৌশলের দিক থেকেও আরও গ্রহণযোগ্যতা পাবে।

বর্তমানে বিষয়টি নাগরিক কোয়ালিশনের অভ্যন্তরীণ আলোচনায় কতটা গুরুত্ব পায়, সেটাই দেখার বিষয়।

Geen reacties gevonden


News Card Generator