হাতিয়ায় নদীর তীরের মাটি কাটায় বিএনপি নেতাকে কারাদণ্ড
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় মেঘনা নদীর তীরের মাটি কাটার অপরাধে মো. ইব্রাহিম নামের বিএনপি নেতাকে সাত দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার (১৭ মে) দুপুরে হরণী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় হাতেনাতে ধরার পর এ অভিযান পরিচালনা করেন সুবর্ণচর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছেনমং রাখাইন। এসময় নদীর তীরের মাটি পরিবহনের দায়ে মো. হোসেন নামের আরেক ব্যক্তিকে তিন দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সাত দিনের কারাদণ্ড প্রাপ্ত মো. ইব্রাহিম হাতিয়া উপজেলার হরণী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। তিন দিনের কারাদণ্ড প্রাপ্ত মো. হোসেন পাওয়ার টিলার চালক। এর আগে সকালে জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে নদীর তীরের মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন বিএনপি নেতা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। স্থানীয় সূত্র ও সংবাদটি প্রশাসনের নজরে আসে। তারপর তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করে বিএনপি নেতা ইব্রাহিম ও চালক হোসেনকে যথাক্রমে সাত দিন ও তিন দিনের কারাদণ্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সুবর্ণচর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছেনমং রাখাইন।
জানা যায়, হাতিয়া উপজেলার হরণী ইউনিয়নসহ প্রায় সব ইউনিয়ন নদী ভাঙনের কবলে রয়েছে। ভাঙনের কারণে মানুষের বসতভিটা এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়রা নদী ভাঙনরোধে কাফনের কাপড় পড়ে মানববন্ধনও করেছেন।
সুবর্ণচর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছেনমং রাখাইন অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, মেঘনা নদীর তীর হতে মাটি কাটার অপরাধে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে মো. ইব্রাহিমকে সাত দিন ও উক্ত স্থান থেকে কর্তনকৃত মাটি পরিবহন করার অপরাধে একই আইনের একই ধারায় মো. হোসেনকে ০৩ (তিন) দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সাজা পরোয়ানাা ও চালানমূলে জেলা কারাগার, নোয়াখালীতে পাঠানো হয়েছে। একই সাথে মাটি পরিবহনের কাজের ব্যবহারকৃত পাওয়ার টিলার জব্দপূর্বক সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন, হাতিয়া বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। চেয়ারম্যান ঘাট নোয়াখালীর মূল ভূখণ্ডের সাথে যুক্ত ফলে আমাদের অভিযান পরিচালনা করা কঠিন। খবর পেয়ে আমরা সুবর্ণচর উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সহযোগিতা নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। জনস্বার্থে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।
নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়াছিন বলেন, হাতিয়া উপজেলার চারপাশে মেঘনা নদী। নদী ভাঙনের ফলে হাতিয়ার অনেক মানুষ গৃহহীন ও ভূমিহীন হয়েছেন। সরকার নদীভাঙন রোধে নানা পরিকল্পনা নিলেও নদী ভাঙন থেমে নেই। আমরা নিজেরাই যদি নদীর পাড়ের মাটি কাটছি, তাহলে নদী আরও দ্রুত ভাঙবে। এক্ষেত্রে আমাদের নিজেদেরও সচেতন হতে হবে।