close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হাম লার ঘটনায় ইবিতে বিক্ষোভ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
গাজীপুরে এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। শতাধিক শিক্ষার্থীর বিক্ষোভ মিছিলে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি তোলা হয়, আর ছাত্রসমাজ হুঁশিয়ারি দেয়—‘..

ইবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল রাত: এনসিপি নেতা হাসনাতের ওপর হামলার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের জোর দাবি!

গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে রবিবার (৪ মে) রাত ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্র জিয়ামোড়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে শতাধিক শিক্ষার্থী।

সেখান থেকে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনের সামনে সমবেত হয়। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র আন্দোলনের ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান, গোলাম রাব্বানী, সাজ্জাতুল্লাহ শেখ, নাহিদ জোয়ার্দারসহ অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী।

 প্রতিবাদে উত্তাল স্লোগান

বিক্ষোভ চলাকালীন শিক্ষার্থীরা একের পর এক স্লোগানে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করে—
‘একশান একশান, ডাইরেক্ট একশান’,
‘হাসনাতের উপর হামলা কেন? ইন্টেরিম জবাব চাই’,
‘দিয়েছি তো রক্ত, আরো দেব রক্ত’,
‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’,
‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করো’,
‘আজ হাসনাত, কাল আমি’।

 বক্তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ:

সমাবেশে বক্তারা বলেন, “যদি একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়েই একজন জনপ্রিয় রাজনৈতিক সংগঠকের উপর এমন হামলা হয়, তবে সাধারণ নাগরিক কিংবা ছাত্রদের নিরাপত্তা কোথায়? পিলখানা থেকে শুরু করে শাপলা চত্বর—একটার পর একটা ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু বিচার হয়নি। বিচারহীনতাই আজকের স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের উৎসাহ।”

তারা আরও বলেন, “এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি যদি বন্ধ না করা হয়, তবে পরবর্তীতে যেই সরকারই আসুক, তারা আরও ভয়ংকর স্বৈরাচার হবে। আমরা চাই ‘ইকোনমি বাড়ান’ কথার ফাঁদে না পড়ে—আওয়ামী লীগের বিচার হোক। তা না হলে এই রাষ্ট্র আবারও লুটেরাদের হাতে পড়বে।”

 ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরব:

সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, “আজ সার্জিসের উপর হামলা, কাল হাসনাতের উপর—এর শেষ কোথায়? এভাবেই ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনৈতিক নেতাদের টার্গেট করে ভয় দেখানোর চেষ্টা চলছে। এই রাজনীতি চলতে দেয়া যায় না। আমরা বলছি, শুধু ছাত্রলীগকে নামেমাত্র নিষিদ্ধ করলেই হবে না, কার্যকরভাবে আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “যখনই এই দাবিটা উঠছে, তখনই রাজনৈতিক দলগুলো তা পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সত্য হলো—চব্বিশের অভ্যুত্থান টিকিয়ে রাখতে হলে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ও বিচারের আওতায় আনতেই হবে।”

 হাসনাত আজ, কাল তুমি!

সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের অগ্রনায়ক হাসনাত ভাইর ওপর যেভাবে হামলা হয়েছে, তা শুধু একজন নেতার ওপর নয়—সমগ্র গণআন্দোলনের ওপরই হামলা। আজ হাসনাতের ওপর হামলা, আগামীকাল আমার বা আপনার উপর হতে পারে। এই বাস্তবতা থেকে চোখ ফিরিয়ে থাকা মানে নিজেকে বিপদে ঠেলে দেয়া।”

তিনি আরও বলেন, “প্রায় এক বছর পার হয়ে গেলেও এখনো অনেকেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পক্ষে নেই। কেন? তারা হয়তো ভোটে হেরে যাবে বলে ভয় পাচ্ছে। কিন্তু গণহত্যার বিচার না করে, বৈষম্যবিরোধী রাজনীতি কখনও পূর্ণতা পাবে না।”

তাঁর কথায়, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আমাদের আহ্বান—সিন্ডিকেটে যেন অভ্যুত্থানের বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”


 

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের এই প্রতিবাদ শুধু একটি হামলার বিরুদ্ধে নয়, এটি ছিল একটি দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা কণ্ঠস্বর। যেখানে ‘গণতন্ত্র’, ‘বিচার’, ও ‘রাজনৈতিক শুদ্ধতা’র দাবি একত্রে উচ্চারিত হয়েছে।

হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার ঘটনাটি হয়তো একটি উদাহরণ মাত্র—প্রতিবাদ ছিল সেই বহু বছর ধরে জমে থাকা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।

نظری یافت نشد