ফিলিস্তিনের দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে, ফাতাহ আন্দোলনের পক্ষ থেকে গাজায় ফিলিস্তিনিদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য হামাসকে গাজা ছাড়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফাতাহ গাজায় মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার পর হামাসকে ক্ষমতা ছাড়ার জন্য অনুরোধ করেছে।
ফাতাহ মুখপাত্র মন্থার আল-হায়েক গাজার জনগণের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে হামাসকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, "হামাসকে এখনই গাজা ছাড়তে হবে, কারণ তাদের শাসন ফিলিস্তিনিদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।" তিনি এও বলেন, "গাজার জনগণের জীবন ও ভবিষ্যতের জন্য তারা যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য।"
২০০৭ সালে গাজা উপত্যকায় হামাস ক্ষমতা দখল করার পর থেকে, ফাতাহ এবং হামাসের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরের ৭ তারিখে ইসরাইলের হামলার পর, গাজার অবস্থা আরও সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে।
হামাসের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, যুদ্ধ শেষ হলে তারা গাজার শাসন ক্ষমতা ছাড়তে প্রস্তুত। তবে অস্ত্র সমর্পণ করবেন কিনা, সে ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। হামাসের মুখপাত্র আব্দুল লতিফ আল-কানু এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতিতে গাজার প্রশাসন নিয়ে কোনো চুক্তি মেনে নিতে প্রস্তুত, তবে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে।”
এদিকে, মিশর হামাসকে গাজার পুনর্গঠন এবং পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য পেশাদার ও টেকনোক্র্যাটদের একটি স্বাধীন কমিটি গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছে। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এই কমিটিকে রামাল্লা ভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করতে বললেও, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এর বিরোধিতা করেছেন।
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে মতবিরোধের ফলে, ইসরাইল ১৮ মার্চ থেকে আবারও গাজায় বিমান হামলা শুরু করে। পরদিন, গাজায় শুরু হয় স্থল অভিযান। ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ হুমকি দিয়েছেন যে, যদি হামাস ৭ অক্টোবরের হামলায় আটককৃত সকল জিম্মিকে মুক্তি না দেয়, তাহলে তারা গাজার কিছু অংশ দখলে নেবে।
২০২৩ সালে ইসরাইলে হামাসের হামলায় ১,২১৮ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক। অপরদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই যুদ্ধের কারণে গাজায় ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
ফাতাহ এবং হামাসের মধ্যে এই উত্তেজনা এবং মানবিক সংকট এখন বিশ্বের নজরে এসেছে, যা ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।



















