গুতেরেসের নিকট যেসব প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন উমামা ....

Umme Hani Akter avatar   
Umme Hani Akter
তরুণ প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ।বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটসহ সমাজ ও রাস্ট্র নিয়ে নানা আলোচনা হয় বৈঠকে। এ ছাড়াও উপস্থিত তরুণ প্রতিনিধিরা নানা ..

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বৈঠকে বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন ।রোববার ভোরে উমামা ফাতেমার ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে। উমামা ফাতেমার ফেসবুক পোস্টটি তুলে ধরা হলো:

শনিবার দুপুরে ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে তরুণ প্রতিনিধিদের বৈঠক আয়োজিত হয়। বৈঠকে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে আমার যুক্ত হওয়ার সুযোগ হয়েছিল। আমার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে যে প্রসঙ্গগুলো উত্থাপনের চেষ্টা করেছি তা হলো-

১) গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় সকল বাহিনীকে ব্যবহার করে গুম, খুন, নির্যাতন চালিয়ে গেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টের সাজেশন অনুযায়ী র্যাব ও এনটিএমসির মতো বাহিনীকে বন্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ।

২) জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান ভলকার তুর্ক তার সাম্প্রতি প্রেস ব্রিফিং এ জানান, ইউএন রিপোর্ট অনুযায়ী আওয়ামী লীগের বিচার করা উচিত। একই সঙ্গে আরেকটি কথা বলেছেন, অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আমাদের এই 'Cycle of Revenge' থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আমার বক্তব্যে জাতিসংঘের International Criminal Court (ICC)-এ আওয়ামী লীগের গণহত্যাকে 'মানবতাবিরোধী অপরাধ' হিসেবে চিহ্নিত করে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের আওতায় আনার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের আবেদন জানাই।

উত্তরে আন্তোনিও গুতেরেস জানান, যেহেতু বাংলাদেশ আইসিসির স্টেট পার্টি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত আছে (২০১১ সাল থেকে), তাই আইসিসির অংশীদার রাষ্ট্রগুলোর সম্মতির ভিত্তিতে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনার সুযোগ বাংলাদেশের আছে।

৪) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থান বিষয়ে ব্যাপক অপতথ্যের ছড়াছড়ি। আওয়ামী লীগ এই সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেলগুলো ব্যবহার করে অনবরত গুজব ছড়িয়ে যাচ্ছে। আমার বক্তব্যে অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীদের গণহারে হেনস্থা ও অপদস্থ করার প্রতিবাদ জানাই। একই সাথে তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে এই Communication platform গুলোর তদারকির দূর্বলতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করি। উদাহরণস্বরূপ, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার মাঠ তৈরির জন্য দেশের মিলিটারি এজেন্সি ফেসবুক ব্যাপক অপতথ্য সার্কুলেট করে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা ও বাস্তুচ্যুত করার সম্মতি উৎপাদন করে। বাংলাদেশে গুজব বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ না হলে সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে ও নারী নিরাপত্তা ব্যাহত হবে।

৫) বাংলাদেশে নারী নিরাপত্তা, একিসাথে নারী ও শিশুবান্ধব পরিবেশ তৈরির জন্য জাতিসংঘের সহায়ক সংস্থাগুলোর অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি তুলে ধরি।

এছাড়া অন্যান্য অংশীজনরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ তুলে আনেন। যার মধ্যে অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে 'Truth & Reconciliation Commission' গঠন,  জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের সার্বিক চিকিৎসা ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে জাতিসংঘের সহায়তা, জুলাই অভ্যুত্থানের সেনাবাহিনী কর্তৃক আয়নাঘরের আলামত নষ্ট করা, ভারত-বাংলাদেশ বর্ডারে বিএসএফ কর্তৃক বর্ডার কিলিং রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ, বন্দিবিনিময় চুক্তির অধীনে শেখ হাসিনা ও পলাতক খুনীদের দেশে ফেরত আনার জন্য জাতিসংঘের মধ্যস্থতার আবেদন, ইউএন এ হাসিনা পরিবারের কর্মরত সদস্যদের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ, বাংলাদেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি পুনর্গঠনে সহায়তাসহ অনেক প্রসঙ্গ উঠে আসে।

আমাদের বৈঠকের সময় সীমিত ছিল, তাই জুলাই অভ্যুত্থান ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আমরা বক্তব্য তুলে ধরার চেষ্টা করি।

- মূলত  গুতেরেসের  কাছে  এই প্রস্তাবগুলো রাখেন  উমামা ফাতেমা।

Ingen kommentarer fundet


News Card Generator