close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

গত সরকারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির খুব কাছাকাছি ছিলাম: বাঁধন..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন মুখ খুললেন আগের সরকারের ভেতরের কারসাজি নিয়ে। বললেন, নিজেই ছিলেন সেই দুর্নীতির নির্বাচনের ‘সাক্ষী’ ও ‘অংশ’। কে ছিলেন তার আশপাশে? কী দেখেছেন তিনি? জেনে নিন পুরো কাহিনি এই এক্স..

দেশের বিনোদন জগতের জনপ্রিয় মুখ আজমেরী হক বাঁধন শুধু অভিনয়ের মঞ্চেই নয়, বরাবরই ছিলেন সামাজিক, রাজনৈতিক এবং নৈতিক বিভিন্ন ইস্যুতে সরব। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে ছাত্র-জনতার কণ্ঠ হয়ে দেখা গিয়েছে তাকে, যেখানে তিনি সাহসিকতার সঙ্গে নিজের অবস্থান তুলে ধরেছেন। এবার তিনি মুখ খুললেন এমন এক বিষয়ে, যা দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে চাপা পড়ে ছিল।

রোববার (১ জুন) নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে একটি বিস্ফোরক স্ট্যাটাস দেন বাঁধন। সেখানে তিনি নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে তুলে ধরেন গত সরকারের আমলের নির্বাচনব্যবস্থা ও তার দুর্নীতিপরায়ণ প্রক্রিয়া।

 

আমি চাই না, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে আবারও সেই একই রাজনৈতিক কৌশল দেখতে হোক। আমি নিজে ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের দুর্নীতি ও কারসাজির সাক্ষী ছিলাম। সত্যি বলতে, এর অংশও ছিলাম। কারণ, আমি তখন প্রচারণায় যুক্ত ছিলাম এবং গত সরকারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির খুব কাছাকাছি ছিলাম।

এই বক্তব্যে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনার ঝড়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যম—সবখানে ঘুরপাক খাচ্ছে বাঁধনের স্বীকারোক্তি। তিনি সরাসরি উল্লেখ করেন, কীভাবে একটি সরকার রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করেছে নিজেদের রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ে। তার ভাষায়

 

আমি নিজ চোখে দেখেছি কীভাবে সিদ্ধান্তগুলো নেয়া হতো এবং এই সিস্টেম কীভাবে আপস করত। ক্ষমতাসীন দল কিভাবে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে, যা ছিল অত্যন্ত অনৈতিক ও অন্যায্য।

বাঁধনের এই উক্তি গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ও জনগণের আস্থার ওপর গভীর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। তিনি শুধু একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী নন, বরং একজন নাগরিক হিসেবে নিজের অবস্থান প্রকাশ করে বুঝিয়ে দিয়েছেন—তিনি কেবল চুপ থেকে শিল্পচর্চায় মগ্ন থাকতে রাজি নন।

 

বাঁধনের এই স্বীকারোক্তির পর অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—তাহলে কি শোবিজ জগতের আরও কেউ এইসব কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন? তিনি কি আরও নাম ফাঁস করতে যাচ্ছেন? আবার অনেকে বলছেন, তিনি কেবল নিজের বিবেকের দায় মেটাতে এবং আগামী দিনের জন্য সৎ অবস্থান জানাতেই এত সাহসিকতা দেখিয়েছেন।

 

বাঁধনের স্ট্যাটাস ঘিরে এখন সৃষ্টি হয়েছে দুই মেরুর প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছেন, এটি ছিল সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় একটি উচ্চারণ—যেখানে তিনি নিজের ভুল স্বীকার করে সত্য প্রকাশ করেছেন। আবার কেউ মনে করছেন, এই স্ট্যাটাস রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, হয়তো নতুন কোনও অবস্থান তৈরি করার চেষ্টাও থাকতে পারে এর পেছনে।

তবে যা-ই হোক, দেশের বর্তমান রাজনীতি, নির্বাচনব্যবস্থা এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষতা নিয়ে যে জনগণের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে, বাঁধনের এই স্ট্যাটাস সেটিকে যেন আরও জোরালোভাবে সামনে এনে দিয়েছে।


 

আজমেরী হক বাঁধনের এই স্বীকারোক্তিমূলক পোস্ট নিছক একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস নয়—এটি এক রাজনৈতিক দুঃসময়ের নির্দিষ্ট মুহূর্তে একজন সচেতন শিল্পীর বিবেকের চিৎকার। একজন অভিনেত্রীর চোখে দেখা বাস্তবতা, যার ভেতর লুকিয়ে আছে হাজারো অদৃশ্য রাজনীতির ছায়া।

No comments found


News Card Generator