close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

গঙ্গা চুক্তি নিয়ে ঢাকার দিল্লির বৈঠক: নতুন যুগে প্রবাহিত হতে পারে সম্পর্ক..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গা চুক্তির ৮৬তম বৈঠক সোমবার থেকে কলকাতায় শুরু হতে যাচ্ছে, যা বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। চলতি রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই বৈঠক কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।..

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যেকার গঙ্গা চুক্তি নিয়ে ৮৬তম যৌথ কমিটির বৈঠক শুরু হতে যাচ্ছে সোমবার, যা পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অনুষ্ঠিত হবে। পাঁচ দিনের এই বৈঠকে অংশ নিতে বাংলাদেশ থেকে ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কলকাতায় পৌঁছেছে। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কারণ গত আগস্টে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের পর ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়ে উঠেছে।

আগে যে সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত দৃঢ়, তা এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে স্পষ্টতই বলা হয়েছে যে, তারা বাংলাদেশের কোনো ‘অন্তর্বর্তী’ বা ‘অনির্বাচিত’ সরকারের সঙ্গে পূর্ণ সমঝোতায় যেতে ইচ্ছুক নয়। এই অবস্থায়, গঙ্গা চুক্তি নিয়ে যৌথ কমিটির বৈঠক বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় হয়ে উঠেছে। ভারত এই বৈঠকের জন্য ‘রাজনৈতিক সবুজ সংকেত’ দিয়েছে এবং বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

গঙ্গা চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয়ে যাবে, যা নিয়ে এখনই আলোচনা শুরু হয়েছে। এই চুক্তির নবায়নের শর্ত কী হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। গঙ্গা চুক্তির ৩০ বছরের মেয়াদ প্রায় শেষ হয়ে আসার ফলে ভারত ও বাংলাদেশ একসাথে বসে চুক্তির ভবিষ্যত নির্ধারণ করতে যাচ্ছে।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, "গঙ্গা চুক্তির বিষয়টি আলাদা, এখানে টেকনিক্যাল কমিটির বিশেষজ্ঞরা বৈঠকে বসছেন কারণ আমাদের হাতে চুক্তি নবায়ন করার জন্য খুব বেশি সময় নেই।" তবে, একই সময়ে তিস্তা নদী নিয়ে কোনো আলোচনা হচ্ছে না, কারণ এতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রয়োজন এবং ভারতের মতে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সে ধরনের কোনো ম্যান্ডেট নেই।

বৈঠকের উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা:

ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশনের সদস্য মুহাম্মদ আবুল হোসেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল সোমবার সকালেই কলকাতায় পৌঁছেছে। ৮৬তম বৈঠকের অংশ হিসেবে, বিশেষজ্ঞরা ফারাক্কা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি প্রবাহের পরিস্থিতি ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে পরিদর্শন করবেন। ৩ ও ৪ মার্চ ফারাক্কা ব্যারাজের বিভিন্ন অংশে যৌথ পরিদর্শন হবে এবং পরবর্তী ৬ মার্চ কলকাতার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে গঙ্গা চুক্তি নিয়ে টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

এটি আসলে একটি রুটিন বৈঠক হলেও, গঙ্গা চুক্তির নবায়ন সামনে রেখে এই বৈঠকের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। বৈঠকে গঙ্গা নদীর পানির প্রবাহ, শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর, এবং পদ্মা নদীতে প্রবাহিত হওয়া পানির পরিমাণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।

এই বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পানি ভাগাভাগির একটি নতুন ফর্মুলার প্রস্তাবনা হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বৈঠকটি কেবল চুক্তির শর্ত নির্ধারণ করবে না, বরং ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কেও একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।

রাজনৈতিক গুরুত্ব:

এই বৈঠকের আরেকটি বিশেষ রাজনৈতিক গুরুত্ব হলো, যদিও বর্তমান বাংলাদেশ সরকারকে ভারতের পক্ষ থেকে তিস্তা বা অন্যান্য রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনা করতে বলা হয়নি, তবে গঙ্গা চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে যে, দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের একটি বিশেষ দিক উন্মোচিত হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বৈঠক কেবল পানি নিয়ে নয়, বরং দুই দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যতও নির্ধারণ করতে পারে।

No comments found