জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত শহীদ ওয়াসিম আকরামের মা জোসনা বেগম সহ অন্যান্য শহীদ পরিবারের সদস্যরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে স্বস্তি ও শান্তির অভিব্যক্তি জানিয়েছেন।
চট্টগ্রামের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ভারতে পালিয়ে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত ফাঁসির রায়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা শহীদ পরিবারের সদস্যরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও, এটি কার্যকর হওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও শঙ্কা বিরাজ করছে।
শহীদ ওয়াসিম আকরামের মা জোসনা বেগম তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানান, "ছেলেকে হারানোর পর থেকে একটি দিনও আমার ভালো কাটেনি, ঘুম হয়নি। রায় শুনে এখন অনেকটা শান্তি লাগছে।" একই ধরনের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন শহীদ ফয়সাল হোসেন শান্তর বাবা জাকির হোসেন। তিনি বলেন, "মনকে কিছুটা হলেও শান্তি দিতে পারছি এই রায় শুনে।"
পটুয়াখালীর দুমকির শহীদ জসিমের বাবা সোবহান অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, "আল্লাহ উচিত বিচার করেছে। এখন হাসিনারে দ্যাশে আইনা ফাঁসি দিলে আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাইবে।" এই রায়কে তারা তাদের সন্তানের রক্তের ন্যায্য দাবির প্রথম ধাপ হিসেবে দেখছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তানজিল মাহমুদ সুজয়ের বাবা শফিকুল ইসলামের মন্তব্য, "এ রায় আমার সন্তানের রক্তের ন্যায্য দাবি পূরণের প্রথম ধাপ।"
তবে, এই শান্তির অনুভূতির মধ্যেও কিছু পরিবার তাদের চিরন্তন ক্ষতির জন্য হতাশা প্রকাশ করেছে। মাগুরার শহীদ ছাত্রদল নেতা রাব্বির স্ত্রী রুমি বলেন, "শেখ হাসিনাকে কোটিবার ফাঁসি দিলেও কি আমার পরাণ জুড়াবে? আমার সামনে তাকে গুলি করে মারা হলেও তো আমার পরাণ জুড়াবে না।" তার এই মন্তব্য বিচার প্রাপ্তির আনন্দ এবং অপূরণীয় ক্ষতির যন্ত্রণার মধ্যে এক তীব্র সংঘাত তুলে ধরে।
ফেনীর শহীদ ইশতিয়াক আহমেদ শ্রাবণের পরিবার রায় ঘোষণার পরপরই তাঁর কবর জিয়ারত করেছে, যা তাদের আবেগ ও রায়ের প্রতি গভীর শ্রদ্ধার প্রকাশ। শোকাহত পরিবারগুলো মনে করে, এই বিচারকার্য কেবল তাদের জন্য নয়, বরং ভবিষ্যতে আর যেন কোনো বাবা-মায়ের বুক খালি না হয়, সেই বার্তা বহন করে। রিকশাচালক শহীদ সবুজের বাবা মোহাম্মদ আলীর দাবি, রায় যেন শুধু ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ না থাকে।



















