ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: শহরের কংক্রিটের ব্যস্ত জীবনে যখন প্রকৃতির ছোঁয়া খুঁজে পাওয়া যেন রীতিমতো লটারি জেতার মতো ব্যাপার, তখন কিছু ঘরেই প্রকৃতি নিজেই এসে আবির্ভূত হয় নীরবে, আপনভাবে। এমনই এক অনন্য অভিজ্ঞতা হয়েছে একটি পরিবারের, যাদের বারান্দা বছর বছর হয়ে উঠেছে ঘুঘু পাখির নিরাপদ নিবাস।
এ্যাপোলো ইনস্টিটিউট অব কম্পিউটারের অধ্যক্ষ এ.আর.এম. শামসুর রহমান বলেন, “আমরা এই বাসায় ওঠার পর থেকে প্রতিবছরই দেখি, আমাদের বারান্দায় ঘুঘু ডিম পাড়ে, বাচ্চা ফুটায়, এবং নিরাপদে তাদের উড়িয়ে নিয়ে যায়। এমন ঘটনা এ পর্যন্ত পাঁচ-ছয় বার তো ঘটেছেই, এমনকি একেক বছর দু’বার করেও এসেছে-দুই ব্যাচে!”
ঘুঘুর এই ফিরে আসা কেবল পাখির প্রজনন নয়, বরং যেন এক আত্মিক বন্ধন, যা তৈরি হয়েছে প্রজন্মান্তরে। পরিবারের সদস্যরা বলেন, “এ সময় বারান্দায় যাওয়া আমরা কমিয়ে দিই, যাতে ওরা ভয় না পায়। একপ্রকার আমরা অপেক্ষা করে থাকি, কবে আসবে ওরা আবার!”
প্রকৃতির এই সরল অথচ গভীর মেলবন্ধন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রাণের সান্নিধ্যে গড়ে ওঠা নির্ভরতা এবং সহাবস্থানের সৌন্দর্য কতটা অপূর্ব। পাখিরা যেখানে বছরের পর বছর ফিরে আসে, সেখানে মানুষ হয়তো একটিবার ফিরে তাকায় না!
ঘুঘুর এমন বার্ষিক আগমন একপ্রকার বারান্দার ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। এটি কেবল একটি পরিবার নয়, বরং শহরজুড়ে প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থানের এক দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে-যেখানে মানুষ ও পাখি মিলেমিশে বাস করে অনুভূতির সুতোয় গাঁথা এক বন্ধনে।
এই গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রকৃতি যখন বিশ্বাস করতে শেখে, তখনই গড়ে ওঠে ভালোবাসার সবচেয়ে শুদ্ধ সম্পর্ক-প্রজন্মান্তর ধরে টিকে থাকা এক আত্মিক বন্ধন।



















