close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

গাজীপুরে চাঞ্চল্য! সচিব চাচার সহায়তায় বয়স বাড়িয়ে, জাল সার্টিফিকেট বানিয়ে সরকারি চাকরি নিলো আরাফাত ইসলাম সবুজ..

Jahangir Alam avatar   
Jahangir Alam
গাজীপুরে চাঞ্চল্য! সচিব চাচার সহায়তায় বয়স বাড়িয়ে, জাল সার্টিফিকেট বানিয়ে সরকারি চাকরি নিলো আরাফাত ইসলাম সবুজ..

জাহাঙ্গীর আলম

🔎 গাজীপুরে চাঞ্চল্য! সচিব চাচার সহায়তায় বয়স বাড়িয়ে, জাল সার্টিফিকেট বানিয়ে সরকারি চাকরি নিলো আরাফাত ইসলাম সবুজ

গাজীপুর প্রতিনিধি:

গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায় আলোচিত হয়ে উঠেছে এক ভয়ঙ্কর প্রশাসনিক দুর্নীতির অভিযোগ। স্থানীয় এক ব্যক্তি, যার প্রকৃত নাম সবুজ মিয়া, নিজ নাম পরিবর্তন করে আরাফাত ইসলাম সবুজ নামে পরিচিত হয়ে সরকারি চাকরি নিয়েছেন ঘুষ, জালিয়াতি ও প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে। পুরো কাহিনীর পেছনে রয়েছেন তার আপন চাচা মনির হোসেন খোকা, যিনি বর্তমানে একজন ইউপি সচিব এবং আগে কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত ছিলেন।

🎓 শিক্ষা ও বয়স নিয়ে জালিয়াতি

তথ্যানুযায়ী, আরাফাত ইসলাম সবুজ মাত্র পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন এবং ২০১২ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় (পিএসসি) অংশগ্রহণ করেছিলেন (রোল নম্বর: ১১৯৩)। অথচ তার চাকরির নথিতে ২০০৮ সালের অষ্টম শ্রেণির সনদ দাখিল করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। প্রশ্ন উঠেছে—একজন ব্যক্তি পিএসসি দিয়েছে ২০১২ সালে, সে কীভাবে তার চেয়ে ৪ বছর আগের অষ্টম শ্রেণির সনদ দাখিল করে?

এই জালিয়াতির মূল কারিগর বলা হচ্ছে তার চাচা মনির হোসেন খোকাকে, যিনি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব পদে থেকে ভাতিজার জন্মনিবন্ধন, বয়স বৃদ্ধি, নাম পরিবর্তন ও ভুয়া শিক্ষাগত সনদপত্র তৈরিতে সরাসরি ভূমিকা রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

📄 জন্ম ও জাতীয় পরিচয়পত্রে অস্বাভাবিক তথ্য

অভিযোগ রয়েছে, সবুজ মিয়ার প্রকৃত জন্ম সাল গোপন রেখে তার বয়স ৬ বছর বাড়ানো হয়েছে, এবং তাকে তার পিতার প্রথম সন্তান হিসেবে দেখানো হয়েছে—যেখানে বাস্তবে তিনি ছিলেন তৃতীয় সন্তান। বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয় তার পিতার বয়স বিশ্লেষণ করলে: জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী, সবুজ যখন জন্মগ্রহণ করে তখন তার পিতার বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর! যা অত্যন্ত হাস্যকর এবং প্রশাসনিক নজরদারির ব্যর্থতার বড় প্রমাণ।

তার বড় দুই বোন, নাজনীন সুলতানা ও ফেরদৌসি, যারা বয়সে অনেক বড়, তাদেরও জন্মতারিখ গোপন রেখে কাগজে ছোট দেখানো হয়েছে যাতে সবুজ মিয়া প্রথম সন্তান হিসেবে প্রমাণিত হয়। এটা একদিকে পারিবারিক সম্পর্কের বিকৃতি, অন্যদিকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্রের বিশ্বাসযোগ্যতার ওপর চরম আঘাত।

💼 সরকারি চাকরি ও ঘুষ বাণিজ্য

এই জালিয়াতির মাধ্যমেই আরাফাত ইসলাম সবুজ আজ সরকারি চাকরিতে কর্মরত—বর্তমানে তার পোস্টিং গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায়। অভিযোগ রয়েছে, এই চাকরি পেতে তিনি ঘুষ প্রদান করেছেন এবং প্রশাসনিক দুর্নীতির একটি চক্র তাকে সহযোগিতা করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, আরাফাত ইসলাম সবুজ এবং তার চাচা মনির হোসেন খোকা দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষমতা, দাপ্তরিক পদ ও রাজনৈতিক যোগাযোগকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত ও ভয় দেখিয়ে চলেছেন। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই হুমকি ধামকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

😔 পরিবারে বিভাজন ও নির্যাতন

আরাফাত ইসলাম সবুজের আপন ভাই আলমগীর কবির একাধিকবার অভিযোগ করেছেন, তার পরিবারে এই জালিয়াতি এবং দুর্নীতির কারণে তিনি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক, সামাজিক ও পারিবারিকভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। তিনি বিষয়টি প্রশাসন ও মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করলেও এখনও পর্যন্ত কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

📢 এলাকাবাসীর দাবি

কাওরাইদ ইউনিয়ন ও আশেপাশের এলাকাবাসী সর্বসম্মতভাবে দাবি করেছেন—এই দুর্নীতির বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)জেলা প্রশাসন, এবং উচ্চতর আদালত পর্যায়ের একটি নিরপেক্ষ তদন্ত জরুরি। পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ প্রশাসনিক প্রভাব বা জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি চাকরি গ্রহণ করতে না পারে।

🎤 সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ

এলাকাবাসী ও অভিযোগকারীরা গাজীপুরের সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন, এই অনিয়ম ও জালিয়াতির খবর সবার সামনে তুলে ধরতে। কারণ এর মাধ্যমে দেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় শুদ্ধতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।


📎 সংযুক্ত প্রমাণপত্র:
অভিযোগকারীর নিকট সমস্ত সংশ্লিষ্ট নথিপত্র ও প্রমাণাদি (জন্মনিবন্ধন, এনআইডি, পিএসসি সনদ, অষ্টম শ্রেণির ভুয়া সনদ, নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত দলিল, চাকরির আবেদনের কপি) সংরক্ষিত রয়েছে যা প্রয়োজনে প্রশাসন ও সাংবাদিকদের সরবরাহ করা হবে।

कोई टिप्पणी नहीं मिली