গাজা উপত্যকায় ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে স্থায়ী শান্তির প্রত্যাশায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক আলোচনায় ট্রাম্প এ তথ্য দেন। তিনি বলেন, “মধ্যস্থতাকারীরা গাজায় ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির চুক্তিতে পৌঁছানোর খুব কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে। আমরা আশা করছি, খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারব।”
এএফপির সূত্রমতে, ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরো জানিয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি তারা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে এবং গাজার অন্যান্য প্রতিরোধ গোষ্ঠীর সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। মার্কিন প্রস্তাব অনুযায়ী, ২৮ জন ইসরাইলি জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ১২শ’রও বেশি ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি এবং ৭০ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে।
তবে, যুদ্ধবিরতি নিয়ে চলমান আলোচনার মধ্যেও গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় গাজায় ৭২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এএফপি জানায়, শুক্রবার গাজার দেইর আল-বালাহ, খান ইউনিস, রাফা এবং গাজা সিটিতে একযোগে ইসরাইলি বাহিনী হামলা চালায়। দেইর আল-বালাহতে একটি বাড়ি লক্ষ্য করে চালানো হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। খান ইউনিসে ইসরাইলি গোলাবর্ষণে প্রাণ হারায় এক শিশু, আহত হয় তার মা।
এদিকে, ইসরাইলি সরকার পশ্চিম তীরে নতুন করে ৫ হাজার বসতি নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে। জর্ডান ও অন্যান্য এলাকায় এই বসতি নির্মাণ করা হবে। জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্বেগ সত্ত্বেও বসতি সম্প্রসারণ বন্ধের কোনো ইঙ্গিত দেয়নি নেতানিয়াহু প্রশাসন। অন্যদিকে, গাজায় পাঠানো মানবিক সহায়তা বহনকারী ট্রাক আটকে দিয়েছে ইসরাইলি বিক্ষোভকারীরা। কেরেম শালোম ক্রসিংয়ের কাছে বিক্ষোভকারীরা ‘কোনো খাদ্য নয়, শুধু জিম্মি ফেরত চাই’ লেখা ব্যানার নিয়ে অবস্থান নেয়। এতে যুদ্ধবিরতি ও সহায়তা পৌঁছানো আরো অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়িত হলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে। তবে, এই চুক্তির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত সমর্থন ও নজরদারি জরুরি।



















