close
ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!
গাজা উপত্যকার জনগণকে স্থানান্তর ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিকল্পনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এই পরিকল্পনাকে ‘জাতিগত নিধন’-এর সামিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
ট্রাম্পের বিতর্কিত ঘোষণা
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজা ‘দখল’ করবে এবং এটি পুনর্গঠন করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেবে। তাঁর মতে, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজাকে পুনর্নির্মাণ করে ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটানো হবে, যা বিপুলসংখ্যক কর্মসংস্থান ও আবাসন সৃষ্টি করবে।
ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র গাজা দখল করবে এবং আমরা এটিকে পুনর্গঠন করব। সেখানে থাকা বিপজ্জনক বোমা ও অস্ত্র ধ্বংস করা হবে, বিধ্বস্ত ভবনগুলো সরিয়ে ফেলা হবে এবং মাটি সমান করা হবে। এরপর এমন একটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে যা বহু মানুষের কর্মসংস্থান ও আবাসন সৃষ্টি করবে।’
তবে ট্রাম্প স্পষ্ট করেননি, এই কর্মসংস্থান কার জন্য হবে। কারণ তিনি একদিকে গাজাবাসীদের উন্নয়নের কথা বললেও, অন্যদিকে তাদের স্থানান্তরের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
জাতিসংঘের তীব্র প্রতিক্রিয়া
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদক ফারনাজ ফাসিহি গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনা সম্পর্কে জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেসের মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গাজার জনসংখ্যা স্থানান্তর এবং ফিলিস্তিনি উপত্যকার উন্নয়নে ট্রাম্পের পরিকল্পনা জাতিগত নিধনের সামিল হবে।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) নিউইয়র্ক টাইমসের জাতিসংঘ ব্যুরো প্রধান ফাসিহি জানান, গুতেরেস আরও বলেন, ‘ট্রাম্পের পরিকল্পনা চিরকালের জন্য একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনাকে অসম্ভব করার ঝুঁকি তৈরি করেছে।’
‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’ গড়ার স্বপ্ন
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি নাটকীয় কিছু বলতে চাই না, মজার কিছু বলতেও চাই না।’ এরপর তিনি গাজার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে বলেন, ‘আমি গাজাকে মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা বানাতে চাই। এটি একেবারে অপূর্ব হতে পারে।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, চলমান গাজা যুদ্ধবিরতি একটি দীর্ঘমেয়াদী শান্তির দিকে নিয়ে যাবে, যা ‘রক্তপাত ও হত্যাযজ্ঞ স্থায়ীভাবে বন্ধ করবে।’
বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা ইতোমধ্যেই বিশ্বজুড়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। ফিলিস্তিনিরা এটিকে তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন, আর মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এটি আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে এবং নতুন সংঘাতের জন্ম দিতে পারে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে এর ফলাফল কী হবে? গাজার ভবিষ্যৎ কি আদৌ নিরাপদ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সময় লাগবে, তবে ফিলিস্তিনিদের জন্য এটি এক নতুন সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
Geen reacties gevonden