গাজা আমেরিকার হলে বিশ্বে শান্তি আসবে!” — ট্রাম্পের বিস্ফোরক মন্তব্যে তোলপাড় আন্তর্জাতিক মহল..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
হোয়াইট হাউসে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে গাজা যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে গেলে 'ফ্রিডম জোন' গড়ে উঠবে বলে মন্তব্য করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড়, আরব দেশগুলো বলছে—এটা জাতিগত নির্..

ওয়াশিংটন, ৩১ মার্চ:
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আবারও আলোড়ন তুললেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গাজা উপত্যকা যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকলে “এটা খুব ভালো একটা বিষয় হবে”—এই মন্তব্য করে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। সোমবার হোয়াইট হাউসে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে এ বক্তব্য দেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প বলেন, “গাজা যদি আমেরিকার মত একটি শক্তিশালী দেশের মালিকানায় যায়, তাহলে সেখানে একটি মুক্ত, নিরাপদ অঞ্চল গড়ে তোলা সম্ভব হবে। আমি একে বলি ফ্রিডম জোন—একটি এলাকা যেখানে প্রতিদিন মানুষ মরবে না।”

তিনি ফিলিস্তিনিদের ‘অন্য দেশে সরিয়ে নেওয়ার’ প্রস্তাব দিয়ে বলেন, “এমন অনেক দেশ আছে যারা ফিলিস্তিনিদের গ্রহণ করতে প্রস্তুত। তাদের সরিয়ে দিলে গাজায় শান্তি ফেরানো যাবে।”

ট্রাম্পের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি এখনো বুঝে উঠতে পারেননি কেন ইসরাইল গাজা ছেড়ে দিয়েছিল। তিনি বলেন, “ওটা এক অদ্ভুত জায়গা—দারুণ লোকেশন হলেও সেখানে কেউ থাকতে চায় না।”

গাজা যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি

২০২৪ সালের মার্কিন নির্বাচনের প্রাক্কালে ট্রাম্প আবারও গাজা যুদ্ধ থামানোর প্রতিশ্রুতি দিলেন। তিনি বলেন, “আমি চাই এই যুদ্ধ শেষ হোক। আমি বিশ্বাস করি, খুব বেশি দেরি নয়—শিগগিরই যুদ্ধ থামবে।”

তবে তিনি এটিও স্বীকার করেন, হামাসের হাতে থাকা সব জিম্মিকে মুক্ত করা একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। “আমরা কাজ করছি, কিন্তু এটা রাতারাতি সম্ভব না,” বলেন তিনি।

নেতানিয়াহু, যিনি হোয়াইট হাউস বৈঠকে ট্রাম্পের পাশে ছিলেন, জানান—ইসরাইল একটি নতুন চুক্তির জন্য কাজ করছে যাতে আরও জিম্মি মুক্ত করা যায়। তিনি বলেন, “আমরা অঙ্গীকার করছি—সব জিম্মিকে মুক্ত করবো। একই সঙ্গে গাজার ভেতর হামাসের দমনমূলক শাসন ধ্বংস করাই আমাদের লক্ষ্য, যাতে গাজার মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে।”

যুক্তরাষ্ট্রের গাজা দখলের পরিকল্পনা

ট্রাম্পের কথিত 'সাহসী পরিকল্পনা' অনুযায়ী, গাজা উপত্যকায় যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য। তিনি বলেন, “এই পরিকল্পনাটি আমি অনেক আগেই দিয়েছিলাম, এবং এখন এটি বাস্তবায়নের সময়।”

তবে এই পরিকল্পনাটি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। বিশেষ করে আরব দেশগুলো একে বলছে—‘জাতিগত নির্মূলকরণের প্রকাশ্য প্রস্তাব’

জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাও এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাদের মতে, গাজার মতো একটি অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয়া মানে সেখানে বসবাসকারী লাখো মানুষের স্বাধীনতা ও অস্তিত্বের ওপর সরাসরি আঘাত।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প এই মন্তব্যের মাধ্যমে তার কট্টর ডানপন্থী সমর্থকদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। তবে এমন মন্তব্য মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তারা।


মন্তব্য:
এই ধরণের বক্তব্য শুধু রাজনৈতিক বিতর্ক নয়, একটি অঞ্চলের মানুষদের অস্তিত্ব ও মানবাধিকার প্রশ্নে ফেলছে—এমনই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

Không có bình luận nào được tìm thấy