হরিয়ানার পঞ্চকুলায় ঋণের চাপে একই পরিবারের সাত সদস্যের মর্মান্তিক আত্মহত্যা
ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের পঞ্চকুলায় সোমবার রাতে ঘটেছে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা—ঋণের চাপ সহ্য করতে না পেরে গাড়ির ভেতর বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন একই পরিবারের সাতজন সদস্য।
মৃতদের মধ্যে রয়েছেন প্রবীণ মিত্তল (৪২), তার বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী এবং তিন সন্তান—দুই মেয়ে ও এক ছেলে। স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে পঞ্চকুলার এক আবাসিক এলাকার সামনে পার্ক করা একটি গাড়িতে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রথমে গাড়ির ভিতর থেকে ছয়টি মরদেহ পাওয়া যায়, এবং প্রবীণ মিত্তলকে গাড়ির বাইরের সিটে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। সঙ্গে সঙ্গে সকলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, চিকিৎসকরা সাতজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
ঋণই শেষ করে দিল জীবনের রং
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রবীণ মিত্তলের পরিবার ছিল গভীর আর্থিক সংকটে। একাধিক উৎস থেকে নেওয়া ঋণের সুদের বোঝা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, পরিবারের পক্ষে তা শোধ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সুইসাইড নোটে স্পষ্ট করে লেখা ছিল, এই আর্থিক দায়ের কারণেই তারা এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অন্তিম রাতের ঘটনা
সোমবার রাতে পরিবারের সদস্যরা একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন। রাত গভীর হওয়ায় তারা সিদ্ধান্ত নেন গাড়িতেই রাত কাটাবেন। পার্কিং করা গাড়ির ভেতরে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন সবাই। কিন্তু পরদিন সকালে এলাকাবাসীরা দেখতে পান, গাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে এবং জানালার কাঁচ ঝাপসা।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, “আমি ও আমার ভাই গিয়ে গাড়িতে থাকা ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করি, ওরা এখানে কেন? সে জানায়, তারা বাগেশ্বর ধাম থেকে ফিরছিল এবং হোটেল না পাওয়ায় গাড়িতে রাত কাটাচ্ছে। আমরা তাকে গাড়ি সরিয়ে নিতে বলি।”
তিনি আরও বলেন, “লোকটি উঠে দাঁড়ায়, গাড়িতে উঁকি দিয়ে যা দেখে, তা সে নিজেও বিশ্বাস করতে পারেনি—একটি নিস্তব্ধ, নিথর গাড়ির ভেতরে ছয়টি নিথর দেহ আর বিষের গন্ধ।”
ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ও স্বীকারোক্তি
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “আমি ছয়জনকে অচেতন অবস্থায় একে অপরের উপর পড়ে থাকতে দেখি। গাড়ির দরজা খুলতেই দুর্গন্ধে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। লোকটি কাঁপতে কাঁপতে বলল, সে আর পাঁচ মিনিটেই মারা যাবে—কারণ সেও বিষ খেয়েছে।”
লোকটি তখন জানায়, বিশাল ঋণের ভারে তার জীবন অচল হয়ে গিয়েছিল। আর সেই হতাশা থেকেই এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
সুইসাইড নোটে বেদনার ছাপ
পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ির ভিতর থেকে পাওয়া গেছে একটি সুইসাইড নোট। সেখানে লেখা হয়েছে, “এই সিদ্ধান্ত আমার। আমার পরিবার দেউলিয়ার খাঁড়া থেকে বাঁচতে পারেনি। আমার শ্বশুর বা অন্য কেউ যেন এই ঘটনার জন্য হয়রানির শিকার না হন।”
এটাও উল্লেখ আছে যে, পরিবারের কোনো সদস্যই বাধ্যতামূলকভাবে এতে অংশ নেননি, বরং সম্মতিতেই এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের পদক্ষেপ ও তদন্ত শুরু
পঞ্চকুলার ডেপুটি কমিশনার হিমাদ্রি কৌশিক এবং ডেপুটি কমিশনার অমিত দাহিয়া ঘটনাস্থলে পৌঁছেই তদন্ত শুরু করেন। পুলিশ মরদেহগুলো স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে এবং ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছে।
এই আত্মহত্যার ঘটনাটি পুরো এলাকাজুড়ে শোক ও আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
হরিয়ানার পঞ্চকুলায় ঋণের চাপে একই পরিবারের সাত সদস্যের মর্মান্তিক আত্মহত্যা
ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের পঞ্চকুলায় সোমবার রাতে ঘটেছে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা—ঋণের চাপ সহ্য করতে না পেরে গাড়ির ভেতর বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন একই পরিবারের সাতজন সদস্য।
মৃতদের মধ্যে রয়েছেন প্রবীণ মিত্তল (৪২), তার বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী এবং তিন সন্তান—দুই মেয়ে ও এক ছেলে। স্থানীয় সময় রাত ১০টার দিকে পঞ্চকুলার এক আবাসিক এলাকার সামনে পার্ক করা একটি গাড়িতে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রথমে গাড়ির ভিতর থেকে ছয়টি মরদেহ পাওয়া যায়, এবং প্রবীণ মিত্তলকে গাড়ির বাইরের সিটে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। সঙ্গে সঙ্গে সকলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, চিকিৎসকরা সাতজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
ঋণই শেষ করে দিল জীবনের রং
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রবীণ মিত্তলের পরিবার ছিল গভীর আর্থিক সংকটে। একাধিক উৎস থেকে নেওয়া ঋণের সুদের বোঝা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, পরিবারের পক্ষে তা শোধ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সুইসাইড নোটে স্পষ্ট করে লেখা ছিল, এই আর্থিক দায়ের কারণেই তারা এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অন্তিম রাতের ঘটনা
সোমবার রাতে পরিবারের সদস্যরা একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন। রাত গভীর হওয়ায় তারা সিদ্ধান্ত নেন গাড়িতেই রাত কাটাবেন। পার্কিং করা গাড়ির ভেতরে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন সবাই। কিন্তু পরদিন সকালে এলাকাবাসীরা দেখতে পান, গাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে এবং জানালার কাঁচ ঝাপসা।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, “আমি ও আমার ভাই গিয়ে গাড়িতে থাকা ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করি, ওরা এখানে কেন? সে জানায়, তারা বাগেশ্বর ধাম থেকে ফিরছিল এবং হোটেল না পাওয়ায় গাড়িতে রাত কাটাচ্ছে। আমরা তাকে গাড়ি সরিয়ে নিতে বলি।”
তিনি আরও বলেন, “লোকটি উঠে দাঁড়ায়, গাড়িতে উঁকি দিয়ে যা দেখে, তা সে নিজেও বিশ্বাস করতে পারেনি—একটি নিস্তব্ধ, নিথর গাড়ির ভেতরে ছয়টি নিথর দেহ আর বিষের গন্ধ।”
ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ও স্বীকারোক্তি
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “আমি ছয়জনকে অচেতন অবস্থায় একে অপরের উপর পড়ে থাকতে দেখি। গাড়ির দরজা খুলতেই দুর্গন্ধে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। লোকটি কাঁপতে কাঁপতে বলল, সে আর পাঁচ মিনিটেই মারা যাবে—কারণ সেও বিষ খেয়েছে।”
লোকটি তখন জানায়, বিশাল ঋণের ভারে তার জীবন অচল হয়ে গিয়েছিল। আর সেই হতাশা থেকেই এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
সুইসাইড নোটে বেদনার ছাপ
পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ির ভিতর থেকে পাওয়া গেছে একটি সুইসাইড নোট। সেখানে লেখা হয়েছে, “এই সিদ্ধান্ত আমার। আমার পরিবার দেউলিয়ার খাঁড়া থেকে বাঁচতে পারেনি। আমার শ্বশুর বা অন্য কেউ যেন এই ঘটনার জন্য হয়রানির শিকার না হন।”
এটাও উল্লেখ আছে যে, পরিবারের কোনো সদস্যই বাধ্যতামূলকভাবে এতে অংশ নেননি, বরং সম্মতিতেই এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের পদক্ষেপ ও তদন্ত শুরু
পঞ্চকুলার ডেপুটি কমিশনার হিমাদ্রি কৌশিক এবং ডেপুটি কমিশনার অমিত দাহিয়া ঘটনাস্থলে পৌঁছেই তদন্ত শুরু করেন। পুলিশ মরদেহগুলো স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে এবং ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছে।
এই আত্মহত্যার ঘটনাটি পুরো এলাকাজুড়ে শোক ও আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
এই ঘটনা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল—অর্থনৈতিক সংকট কেবল একটি সংখ্যাত্মক সমস্যা নয়, বরং তা একটি পরিবারের অস্তিত্বকেই ধ্বংস করতে পারে। প্রবীণ মিত্তল ও তার পরিবারের এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত শুধু একটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, বরং সামাজিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থার এক জ্বালাময়ী চিত্র।
এই ঘটনা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল—অর্থনৈতিক সংকট কেবল একটি সংখ্যাত্মক সমস্যা নয়, বরং তা একটি পরিবারের অস্তিত্বকেই ধ্বংস করতে পারে। প্রবীণ মিত্তল ও তার পরিবারের এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত শুধু একটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, বরং সামাজিক-অর্থনৈতিক ব্যবস্থার এক জ্বালাময়ী চিত্র।