ফ্যাসিস্ট কিন্তু থাবা মারার জন্য বসে আছে’ : উপদেষ্টাদের সতর্ক করলেন এ্যানি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সরকার গঠনের পরও নিরাপদ নয় বাংলাদেশ—বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি স্পষ্ট করে জানালেন, দেশে-বিদেশে বসে থাকা ফ্যাসিস্টরা আবারো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। উপদেষ্টাদের করলেন সতর্ক, দাবি করলেন দ্রু..

বর্তমান সরকারের স্থিতিশীলতা ও জাতীয় ঐক্যের ভিত আরো মজবুত করতে উপদেষ্টাদের প্রতি সরাসরি সতর্কবার্তা দিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি। তিনি বলেছেন, “ফ্যাসিস্ট শক্তিগুলো আজো থেমে নেই। তারা দেশ-বিদেশে বসে ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত। সুযোগ পেলেই থাবা মারবে। তাই সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।”

শনিবার (২৪ মে) সকালে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং উত্তরজয়পুর ইউনিয়নের দক্ষিণ মাগুরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়ার্ডভিত্তিক নেতা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পরিদর্শন শেষে এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এ্যানি স্পষ্ট করে বলেন, “এই সরকার আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করেছি। এটি জনগণের সরকার। এই সরকার জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে গঠিত। তাই আমাদের দায়িত্ব—এই সরকারকে সহায়তা করা। তবে সেই দায়িত্ব পালনের জন্য প্রতিটি উপদেষ্টাকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আপনারা যদি দায়িত্বে অবহেলা করেন, যদি দ্রুত হাসিনার বিচার দৃশ্যমান না হয়, তাহলে জনগণের মধ্যে অসন্তোষ বাড়বে। বিপদ আরও ঘনিয়ে আসবে।”

 জাতীয় ঐক্য ও সংস্কারের আহ্বান

এ্যানির বক্তব্যে উঠে আসে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এখন একটি টার্নিং পয়েন্টে দাঁড়িয়ে। আমাদের একদিকে নির্বাচন নিয়ে রোডম্যাপ দিতে হবে, অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় সংস্কার করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেভাবে বলেছে, তাতে তিন মাস বা ছয় মাস—যত সময়ই লাগুক, সংস্কারের ফল দৃশ্যমান হতে হবে।”

তিনি হুঁশিয়ার করে দেন, “যদি ঐক্য গঠনে ব্যর্থ হই, তাহলে সুযোগ নেবে সেই ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী যারা এখনো নেপথ্যে ওঁৎ পেতে বসে আছে।”

 প্রতিবেশী দেশের হস্তক্ষেপের আশঙ্কা

এ্যানি আরও দাবি করেন, “ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করে আসছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ ঐক্য না থাকলে, এ সুযোগ তারা কাজে লাগাবে। তাই এখনই সময় ঐক্যবদ্ধ হবার।”

তিনি বলেন, “দেশের প্রতিটি নাগরিককে এখন ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কোনো ফাটল সৃষ্টি করা যাবে না। যারা ফাটল ধরাতে চায়, তারা নিজেরাই পিছিয়ে পড়বে।”

শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও বিচারের দাবি

এ্যানি বলেন, “আমাদের ত্যাগ বৃথা যাবে না। গত ১৭ বছর ধরে যেসব নেতাকর্মী নিখোঁজ, গুম-খুনের শিকার হয়েছেন, এবং সাম্প্রতিক আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন—তাদের রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। এই দাগের দায় সরকারকে নিতে হবে।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “খুনের বিচার অত্যন্ত জরুরি। হাসিনা ও তাঁর দোসরদের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। এই বিচারের ফল জনগণের সামনে দৃশ্যমান হতে হবে।”

 সময় নষ্ট না করার আহ্বান

সভায় শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “মাননীয় উপদেষ্টাগণ, সময় বারবার আসবে না। জাতীয় দায়িত্ব পালনে সময় অপচয় করা যাবে না। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বকে শক্তিশালী করতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। আগামী বাংলাদেশের ভিত্তি এখনই গড়তে হবে।”

 উপস্থিত নেতৃবৃন্দ

সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি, জেলা বিএনপির সদস্য হাফিজুর রহমান, চন্দ্রগঞ্জ থানা বিএনপির আহ্বায়ক বেলাল হোসেন এবং দিঘলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।


এ্যানির বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, বিএনপি সরকার গঠনের পরও আত্মতুষ্টিতে ভুগছে না। বরং নতুন করে বিপদের আশঙ্কা করছে। এবং সেই আশঙ্কা থেকে দলীয় উপদেষ্টাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। জাতীয় ঐক্য, দ্রুত বিচার, সংস্কার—সবই এখন সময়ের দাবি।

Không có bình luận nào được tìm thấy