close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

ফ্যাসিবাদ নয়, ইনসাফ চাই- নির্বাচনের প্রাক্কালে আপসহীন অবস্থানে, খেলাফত মজলিসের আমির..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভারতীয় আধিপত্য ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থানের ঘোষণা দিলেন খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। বললেন, ইসলামী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে ইনসাফভিত্তিক কল্য..

বাংলাদেশের রাজনীতিতে যখন আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নানা হিসাব-নিকাশ চলছে, ঠিক তখনই ভারতীয় আধিপত্য ও ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে এক কঠোর ও আপসহীন অবস্থান জানালেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক।

শনিবার ঢাকার দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের মাসিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, "নির্বাচনের পদ্ধতি, প্রতীক কিংবা জোট আলাদা হতে পারে; কিন্তু দেশদ্রোহী ভারতীয় আধিপত্য ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কোনো আপস নয়।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইনসাফভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া দেশের মুক্তি নেই। এজন্য ইসলামী দলগুলোকে আদর্শিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সামনে এগিয়ে আসতে হবে।

সভায় মামুনুল হক কেবল দেশের রাজনীতি নিয়েই বক্তব্য দেননি, তুলে ধরেন আন্তর্জাতিক ইস্যুও। তিনি বলেন, ইরান ও অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের মধ্যে চলমান সংঘাত কেবল ভূ-রাজনৈতিক বিষয় নয়, এটি “ইনসাফ বনাম দখলদারিত্বের লড়াই”। তিনি ইরানের অবস্থানকে মুসলিম উম্মাহর জন্য আত্মমর্যাদার উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেন।

এই প্রেক্ষাপটে আগামী ২৭ জুন দেশব্যাপী ‘ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে’ বিক্ষোভ মিছিল আয়োজনের ঘোষণা দেন তিনি। এছাড়া ২৯ জুন দলের রিকশা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎ ও দিকনির্দেশনার জন্য নির্ধারিত দিন ঠিক করা হয়।

মামুনুল হক জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন শাসনব্যবস্থা একটি ‘ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীতে’ পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, শাপলা চত্বর থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত সংঘটিত গণহত্যা, গুম-খুন, দমন-পীড়নের দায়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন এই দলটি ভোটের মাধ্যমে জিততে পারবে না বলেই প্রশাসন, আদালত এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

তিনি 'জুলাই সনদ'-এর কথা উল্লেখ করে বলেন, এটি একটি সম্ভাব্য জাতীয় ঐক্যের রূপরেখা দিতে পারে, তবে তাতে ইসলামী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর স্বীকৃতি ও যথাযথ অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে তা শুধুই একপাক্ষিক প্রচেষ্টা হয়ে থাকবে।

আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ তুলে ধরে মামুনুল হক বলেন, "মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোকে এখন দ্বিধাহীন অবস্থান নিতে হবে। ইসরাইলি যুদ্ধবিমান যেন মুসলিম ভূখণ্ডের আকাশ ব্যবহার করতে না পারে, সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ইসরাইলকে প্রতিহত করতে মুসলিম বিশ্বকে এক প্ল্যাটফর্মে এসে দ্ব্যর্থহীনভাবে ইনসাফের পক্ষে দাঁড়াতে হবে।

সভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন: ইউসুফ আশরাফ, মুফতি সাঈদ নূর, মাওলানা মুহিউদ্দীন রব্বানী, শাহীনুর পাশা চৌধুরী, কোরবান আলী কাসেমী, আব্দুল আজীজ, শরীফ সাইদুর রহমান, এনামুল হক মূসা, আবুল হাসানাত জালালী, ফজলুর রহমান, রুহুল আমীন খান, হাসান জুনাইদসহ শতাধিক কেন্দ্রীয় নেতা।

সভা পরিচালনা করেন দলের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যখন বিভক্তি, অনিশ্চয়তা এবং আপসের ধারা চলছে, তখন মামুনুল হকের এই বক্তব্য ইসলামী রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে নতুন করে চিন্তার উদ্রেক ঘটিয়েছে।

তিনি ইসলামী ও দেশপ্রেমিক শক্তিকে উদ্দেশ্য করে যে বার্তা দিয়েছেন—তা কেবল একটি দলের বক্তব্য নয়, বরং জাতীয় রাজনীতিতে ইনসাফ, স্বাধীনতা ও আধ্যাত্মিকতার ভিত্তিতে একটি বিকল্প পথের ডাক বলেই প্রতীয়মান হয়।

Walang nakitang komento