close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ফেব্রুয়ারিতেই আত্মপ্রকাশ করবে তরুণ নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল: কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জমকালো আয়োজন

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
এবারের ফেব্রুয়ারি শাসনকর্তা ক্ষমতার পরিবর্তনের নতুন সূচনা হতে চলেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির আওতায় তরুণদের নেতৃত্বে একটি নতুন রাজনৈতি
এবারের ফেব্রুয়ারি শাসনকর্তা ক্ষমতার পরিবর্তনের নতুন সূচনা হতে চলেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির আওতায় তরুণদের নেতৃত্বে একটি নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। দলটির নেতৃত্বে থাকবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, যিনি দলের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তবে দলটির সদস্যসচিব কে হবেন, সে বিষয়ে এখনো চলছে তুমুল বিতর্ক। নতুন দলের ঘোষণা: ২১ ফেব্রুয়ারির আশপাশে জানা গেছে, এই নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটবে ২১ ফেব্রুয়ারির আশপাশের সময়ে, একটি জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে, যা অনুষ্ঠিত হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সারা দেশ থেকে তরুণ ছাত্রনেতারা যোগদান করবেন এবং সেই দলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ছাত্রসংগঠনও যুক্ত হবে। এটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। সম্প্রতি বেসরকারি একটি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা যারা গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিলাম, তাদের নেতৃত্বেই এই দলটির সৃষ্টি হবে। ছাত্রদের সম্মিলিত উদ্যোগে এই দলটি গঠন হতে যাচ্ছে, এবং এর অংশ হতে হলে অবশ্যই সরকার থেকে পদত্যাগ করতে হবে। যদি আমি এই দলে যোগ দিতে চাই, তবে আমাকে পদত্যাগ করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, "এ মাসেই দল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, এবং যদি তেমনটি হয়, তবে আমি এ মাসেই সরকারের পদত্যাগ করব এবং দলে অংশগ্রহণ করব। আরও কয়েক দিনের মধ্যে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাব।" দলের নেতৃত্ব নিয়ে চলছে বিতর্ক এদিকে, যদিও নাহিদ ইসলাম দলের আহ্বায়ক পদে চূড়ান্ত হয়েছেন, সদস্যসচিব কে হবেন, তা নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা চলছে। জাতীয় নাগরিক কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে এই আলোচনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র হয়ে উঠেছে। বিশেষ সূত্র মতে, ছাত্রনেতাদের সমন্বয়ে এই প্ল্যাটফর্মটি গঠন করা হয়েছে, যেখানে আছেন আখতার হোসেন, আসিফ, নাহিদ, সাবেক শিবিরের নেতা, ছাত্র ফেডারেশন, বামপন্থীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক অংশীজন। এখন দলটির শীর্ষ নেতৃত্বে সবাই নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে চান। সদস্যসচিব পদে যাদের নাম দলের সদস্যসচিব পদে আলোচনায় রয়েছেন কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তাদের মধ্যে আছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবিরের সাবেক সভাপতি এবং নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, এবং সারজিস আলম। এই নেতাদের মধ্যে কাদের সমর্থন থাকবে এবং কাদের মধ্য থেকে আসবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে তুমুল আলোচনা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিডিয়া সেলের সম্পাদক আল মাশনূন ফেসবুকে একটি পোস্টে জানিয়েছেন, “আখতার হোসেন যদি আমাদের ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বস্থানে কোথাও না থাকে, তাহলে এই রাজনৈতিক বন্দোবস্ত আমাদের জন্য উপযোগী হবে না।” এছাড়া, আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুমও তার ফেসবুক পোস্টে আখতার হোসেনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, “আখতার হোসেন ভাই আমার পীর। ভাইয়ের হাতে রাজনীতির বায়াত হয়েছে, এবং তিনি যদি আমাকে কোনও নির্দেশ দেন, আমি তা মেনে চলব।" নতুন দল নিয়ে জনগণের মতামত সংগ্রহ নতুন দলটির বিষয়ে আরও এক গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো জনগণের মতামত সংগ্রহ প্রক্রিয়া। জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন জানিয়েছেন, "আমরা জনমত জরিপ পরিচালনা করছি। অনলাইনে এবং অফলাইনে বিভিন্ন জেলা থেকে মতামত আসছে। সেই ডেটা অ্যানালাইসিস করা শুরু হয়েছে এবং জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে দল গঠন প্রক্রিয়া এগিয়ে চলেছে।" তিনি আরও বলেন, “আমরা আমাদের জনগণের মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দলের গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করছি। দলটি যেন এক ব্যক্তি বা পরিবারকেন্দ্রিক না হয়ে তরুণদের নেতৃত্বে এগিয়ে যায়, সে দিকে আমরা লক্ষ্য রাখছি।” সামান্তা শারমিন দল ঘোষণার ব্যাপারে বলেন, “আমরা জানি, জনগণ আমাদের দলের জন্য আগ্রহী। এই মুহূর্তে দল গঠন প্রক্রিয়া পূর্ণতা পেতে চলেছে, এবং ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে আমরা দলে ঘোষণা দিতে পারব।" রাজনৈতিক দল গঠন প্রক্রিয়া ও জনগণের সমর্থন গুগল ফর্মের মাধ্যমে জনগণের মতামত সংগ্রহ করা হয়েছে, এবং মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ এই ফর্মে অংশ নিয়েছে। এটি একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত যে, নতুন রাজনৈতিক দলটির প্রতি জনগণের আগ্রহ অনেক বেশি। তরুণদের এই শক্তিশালী সমর্থন দলটির ভবিষ্যতকে আরও দৃঢ় করে তুলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে, এখন প্রশ্ন হচ্ছে—এই দলটি দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যে কোন পরিবর্তন নিয়ে আসবে এবং তরুণদের নেতৃত্বে গঠিত এই দল কতটা সফল হবে? তা শুধু সময়ই বলে দেবে। সর্বশেষ কথা এখন পর্যন্ত জানা গেছে, ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন সুরের সূচনা হতে চলেছে। এটি তরুণদের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক মঞ্চ তৈরি করবে, যেখানে থাকবে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব এবং জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া। তবে, কে হবেন দলের সদস্যসচিব এবং চূড়ান্ত নেতৃত্বে কে আসবেন, তা নিয়ে তীব্র আলোচনা চলছেই।
Ingen kommentarer fundet