আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে—এমনই আভাস দিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন পুরোপুরি প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সিইসি জানান, "কমিশন ফুল গিয়ারে প্রস্তুতি নিচ্ছে।" নির্বাচনকে ঘিরে নানা প্রশ্ন, গুঞ্জন আর জল্পনা-কল্পনার মাঝেই এই বক্তব্যে কিছুটা স্বচ্ছতা এসেছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে উঠে আসে সদ্য অনুষ্ঠিত প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনারের বৈঠক প্রসঙ্গ।
সিইসি জানান, বৈঠকে মূলত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে কমিশনের প্রস্তুতির হালচিত্র জানতে চেয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন:প্রধান উপদেষ্টা জানতে চেয়েছেন নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি সম্পর্কে। আমরা জানিয়েছি—আমরা পুরোপুরি প্রস্তুতি নিচ্ছি, আমাদের কাজ শুরু হয়ে গেছে।
এছাড়া প্রধান উপদেষ্টা একটি ফ্রি, ফেয়ার এবং ক্রেডিবল নির্বাচন চান বলেও উল্লেখ করেন সিইসি।
সিইসি স্পষ্টভাবে জানান, জাতীয় নির্বাচনের তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি। তবে যেদিন তারিখ ঠিক হবে, নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমেই তা প্রকাশ করা হবে।
তিনি বলেন,নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ নিয়ে এখনও আলোচনা হয়নি। তবে প্রস্তুতির কাজ চলছে পুরোদমে।
এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের ভেতরে চলছে প্রাথমিক পরিকল্পনা, টেকনিক্যাল প্রসেসিং, লজিস্টিক প্রস্তুতি এবং বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয়।
সিইসির বক্তব্যে স্পষ্ট যে নির্বাচন কমিশন চায় একটি গ্রহণযোগ্য, অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন।
তিনি বলেন,উনি (প্রধান উপদেষ্টা) খুব আন্তরিক ফ্রি ও ফেয়ার নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে। আমরা সবাই চাই যেন মানুষ ভোট দিতে পারে স্বাধীনভাবে, আর সেটাই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
নির্বাচনকে ঘিরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আগ্রহ, রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ এবং নির্বাচনী পরিবেশ—সব মিলিয়ে এই নির্বাচন হতে যাচ্ছে ২০২৫ সালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সিইসির বক্তব্যে একটি বিষয় পরিষ্কার—নির্বাচন কমিশন কোনরকম দেরি করতে রাজি নয়।
কমিশনের পরিকল্পনার গতি ও প্রস্তুতির বিস্তার এই মুহূর্তে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে দেশের রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে।
নির্বাচন কমিশনের এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে এখন জনগণ, রাজনৈতিক দল, আন্তর্জাতিক মহলসহ সব পক্ষের দৃষ্টি নিবদ্ধ নির্বাচনের নির্ধারিত তারিখ এবং কমিশনের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।
সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি নিয়ে এখন আর ধোঁয়াশা নেই—সবচেয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।