close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

এনসিপির সমাবেশে সারজিসের উপস্থিতিতেই “সারজিস হঠাও” স্লোগান নিয়ে দুই পক্ষের মা রা মারি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আয়োজিত এনসিপির সমাবেশেই নিজের উপস্থিতিতে ‘সারজিস হঠাও’ স্লোগানে ফেটে পড়ে দলীয় কোন্দল! মঞ্চেই হাতাহাতি, ধাওয়া, পুলিশি পাহারায় শেষ হয় বিক্ষোভ।..

বগুড়া শহরের কেন্দ্রস্থলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর একটি বহুল আলোচিত রাজনৈতিক সমাবেশ বুধবার এক চরম উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। উদ্দেশ্য ছিল ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে’ জনগণের মধ্যে বার্তা পৌঁছানো, কিন্তু বাস্তবতা দাঁড়ায় সম্পূর্ণ উল্টো—সমাবেশ রূপ নেয় সংঘর্ষের মঞ্চে।

বিকেল সাড়ে চারটার দিকে শহীদ টিটু মিলনায়তনের সামনে আয়োজিত এই সমাবেশে যখন এনসিপির কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম উপস্থিত হন, তখনই শুরু হয় নাটকীয়তা। ছাত্র সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর একটি অংশ বিশাল মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে ঢুকে পড়েন। হঠাৎ করেই তাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হতে থাকে, “সারজিস হটাও!” —এই স্লোগান।

এমন স্পষ্ট আক্রমণাত্মক অবস্থান সারজিস আলমের সমর্থকদের উত্তেজিত করে তোলে। দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা থেকেই শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি, মুহূর্তেই সেটি রূপ নেয় তুমুল মারামারিতে। চেয়ার ছোড়াছুড়ি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, এমনকি কিছু জায়গায় কিলঘুষিও লেগেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত মঞ্চে আসেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব তাহসিন রিয়াজ, মুখ্য সংগঠক সাকিব মাহদী, নেতা নাজমুল ইসলাম ও সাদিয়া ফারজানা মাত্র এক মিনিট করে বক্তব্য দেন। সারজিস আলম নিজে মাত্র চার মিনিট কথা বলে মঞ্চ ত্যাগ করেন, যা তাঁর সমর্থকদের মধ্যেও বিরক্তি তৈরি করে।

এ ঘটনার পরপরই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। সাতমাথা ঘুরে মিছিল শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলো অতিক্রম করে, তবে পুরোটা সময় পুলিশের কঠোর নজরদারি ছিল।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম মঈনুদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, “সমাবেশ চলাকালীন এনসিপির অভ্যন্তর থেকেই একটি অংশ সারজিস আলমের বিরুদ্ধে সরব হয়ে ওঠে। প্রতিপক্ষ প্রতিবাদ করতে গেলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দ্রুত পুলিশ মোতায়েন করি।”

এনসিপির বগুড়া জেলার সংগঠক আহমেদ সাব্বির বলেন, “আমাদের কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল সরকারের স্বৈরাচারী আচরণের প্রতিবাদ ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি। কিন্তু একটি বহিষ্কৃত কেন্দ্রীয় নেতার অনুসারীরা পরিকল্পিতভাবে অরাজকতা সৃষ্টি করেছেন।”

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ঘটনার গভীরে রয়েছে এনসিপির দীর্ঘদিনের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। সারজিস আলমের নেতৃত্বে দলের একাংশ শক্ত অবস্থানে থাকলেও, অপর অংশ মনে করছে তার নেতৃত্ব অনিয়মতান্ত্রিক ও কর্তৃত্ববাদী। এই দ্বন্দ্বই আজ প্রকাশ্যে এসেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এনসিপির মতো নতুন উদীয়মান রাজনৈতিক দলের জন্য এমন অর্ন্তদ্বন্দ্ব বিশাল ক্ষতির কারণ হতে পারে। জনগণের সামনে দলীয় ঐক্য না দেখাতে পারলে ভবিষ্যতের রাজপথে এদের অবস্থান দুর্বল হতে বাধ্য।

দলের ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে

এই ঘটনার ফলে এনসিপির রাজনৈতিক ভাবমূর্তিতে বড় ধরনের আঘাত এসেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে, “নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা দল কীভাবে একটি বৃহৎ জাতীয় আন্দোলন সফলভাবে পরিচালনা করবে?

Inga kommentarer hittades