close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

এমন সব বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের মজুদ রয়েছে, যা এখনো ব্যবহারই করেনি ইরান!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ এখন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। কিন্তু এর মধ্যেও ইরান গোপন রেখেছে এমন কিছু বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, যা একবার ছোঁড়া হলে একাধিক শহর গুঁড়িয়ে যেতে পারে। এসব ‘ডুমসডে’ অস্ত্র এখনো ব্যবহার করা হয়নি—কি..

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাত গড়িয়েছে নবম দিনে। প্রথমদিকে আন্তর্জাতিক মহল আশাবাদী ছিল যুদ্ধবিরতির, কিন্তু এখন সেই সম্ভাবনা কেবল কল্পনা মাত্র। বাস্তবে যুদ্ধ পরিস্থিতি পৌঁছেছে এমন এক দুঃসহ বাস্তবতায়, যেখানে প্রতিটি মুহূর্তে বিস্ফোরণের শব্দ, ধ্বংসস্তূপ আর আতঙ্কের শ্বাস ফেলা যাচ্ছে।

এই সংকটজনক মুহূর্তে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির হুঁশিয়ারিমূলক বক্তব্য—“যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে”—পরিস্থিতিকে নতুন এক মোড় দিয়েছে। তাঁর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই ইরানের সেনাবাহিনী ভয়াবহ পাল্টা হামলায় নামে। জেরুজালেম, তেল আবিবসহ একাধিক শহরে একযোগে আঘাত হানে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে জনজীবন। রাজধানীজুড়ে জারি হয় বিমান সতর্কতা।

ইসরায়েলি সরকার জানিয়ে দিয়েছে—এই অভিযান চলবে যতদিন প্রয়োজন, পিছু হটার প্রশ্নই ওঠে না”। এর অর্থ পরিষ্কার—এখন আর এটা কেবল প্রতিরোধ নয়, বরং পুরোপুরি প্রতিশোধের খেলা।

ইরান একাধিক বার জানিয়েছে, তাদের হাতে এমন কিছু উন্নত প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যা এখনো ব্যবহারই করা হয়নি। হুঁশিয়ারির কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা ছুঁড়ে দেয় উচ্চগতিসম্পন্ন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, যেগুলো এত দ্রুত ছুটে আসে যে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কার্যত ধসে পড়ে।

সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র সারা বিশ্বে হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি দেশের কাছেই রয়েছে। এই অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে ইরান পরিষ্কার বার্তা দিচ্ছে—তারা এই যুদ্ধে প্রস্তুত এবং প্রয়োজনে শেষ সীমা অবধি যেতে রাজি।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, এসব হামলা চালানো হচ্ছে দিন ও রাতে—দু’সময়েই। যার কারণে ইসরায়েলের জন্য আক্রমণের সময় আঁচ করা কিংবা প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি নেওয়া একপ্রকার অসম্ভব হয়ে উঠেছে।

দ্য নিউ আরব-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান এখনো তাদের সবচেয়ে বিধ্বংসী হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘শহীদ হাজ কাশেম’ ব্যবহার করেনি। শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ দ্রুতগামী এই ক্ষেপণাস্ত্র সলিড ফুয়েল চালিত এবং নামকরণ করা হয়েছে কুদস ফোর্সের প্রয়াত কমান্ডার কাশেম সোলাইমানির নামে।

কিন্তু সবচেয়ে আতঙ্কজনক নামটি হচ্ছে—‘খোররামশাহ’, যাকে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো সরাসরি ‘ডুমসডে ক্ষেপণাস্ত্র’ বলে উল্লেখ করছে। এটি ইরানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র, যার ওয়ারহেড বহনের ক্ষমতা ১,৮০০ কেজি পর্যন্ত। অর্থাৎ, এটি যদি কোনো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আঘাত হানে, তাহলে সম্পূর্ণ ব্লক ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার অর্থ হলো—সরাসরি যুদ্ধের মোড় একটি পারমাণবিক ধ্বংসযজ্ঞের দিকেও এগিয়ে যেতে পারে।

বিশ্ব এখন উদ্বেগে কাঁপছে। কারণ ইরানের হাতে যে ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ রয়েছে, তার পুরোটা এখনো ব্যবহৃত হয়নি। কাদর, এমাদ, জলফাগার, ফাতেহ—এই সমস্ত ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ করা হয়েছে হাজার হাজার পরিমাণে। এবং এগুলোর একটি বড় অংশ এখনো আঘাত হানেনি।

এই পরিস্থিতিতে পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধের পরিসর ঠিক কতটা বিস্তৃত হবে, তা কেউ অনুমান করতে পারছে না।
বিশ্ববাসী এখন আতঙ্কে দিন গুনছে—ইরান ঠিক কখন খুলে দেবে তার ‘শেষ অস্ত্রের বাক্স’।

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত আর কূটনৈতিক আলোচনার স্তরে নেই। এখন এটি পূর্ণমাত্রায় এক বিধ্বংসী যুদ্ধ, যেখানে প্রতি মুহূর্তে পাল্টে যেতে পারে বাস্তবতা। ইরানের ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র ভান্ডার এখনো সম্পূর্ণ উন্মোচিত হয়নি, এবং সেখানেই লুকিয়ে আছে এই যুদ্ধের সবচেয়ে বড় বিস্ফোরণ।

Nessun commento trovato