close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

এক ব্যাগ রক্তে স্যালাইন মিশিয়ে তিন ব্যাগ! ময়মনসিংহে ভয়ঙ্কর চক্রের কারসাজি ফাঁস

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত চুরির সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছে দুই ব্যক্তি। শনিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটার পর পুলিশি জেরায় উঠে আসে ভয়ঙ্কর এক চক
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত চুরির সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছে দুই ব্যক্তি। শনিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটার পর পুলিশি জেরায় উঠে আসে ভয়ঙ্কর এক চক্রের গোপন কর্মকাণ্ড। এই চক্র এক ব্যাগ রক্তকে স্যালাইনের মাধ্যমে তিন ব্যাগে পরিণত করে বিক্রি করত। এমনকি, মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকেও তারা রক্ত সংগ্রহ করত। ধৃত দুই অপরাধী এবং চক্রের কার্যক্রম গ্রেপ্তারকৃত দুই ব্যক্তি হলেন মো. নাঈম খান (৩৮) ও মো. আবদুল্লাহ ওরফে তুষার চন্দ্র দে (২২)। নাঈম খান তারাকান্দার বাসিন্দা এবং তুষার চন্দ্র ময়মনসিংহের আকুয়া মোড়ল বাড়ি এলাকার। এ বিষয়ে হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার সেলিম মিয়া মামলা দায়ের করেন। পুলিশের তথ্যমতে, এরা রক্ত চুরি করে স্যালাইনের সাথে মিশিয়ে তা বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহ করত। তাদের দাবি, নগরীর বিভিন্ন অবৈধ ব্লাড ব্যাংক এবং ক্লিনিকে এ রক্ত বিক্রি করত তারা। এছাড়া, মাদকাসক্তদের রক্ত সংগ্রহ করে তারা তা রোগীদের জন্য ব্যবহার করত, যা রোগীদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। ভুয়া ব্লাড ব্যাংক ও রসিদ ময়মনসিংহ শহরে অনেক ভুয়া ব্লাড ব্যাংক সক্রিয়। এদের নামে থাকা রসিদে ঠিকানা ও যোগাযোগ নম্বর থাকলেও বাস্তবে তাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মতে, সরকারি অনুমোদিত ব্লাড ব্যাংকগুলো হচ্ছে: ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক কমিউনিটিভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ব্লাড ব্যাংক ময়মনসিংহ ব্লাড ব্যাংক অ্যান্ড ট্রান্সফিউশন সেন্টার নিরাপদ ব্লাড ট্রান্সফিউশন সার্ভিস সেন্টার তবে এ চক্রের সঙ্গে যুক্ত কিছু নামসর্বস্ব ব্লাড ব্যাংকের তালিকা পাওয়া গেছে। এগুলো হচ্ছে রেটিনা ব্লাড ট্রান্সফিউশন সেন্টার, সেইফ ব্লাড সার্ভিস সেন্টার ইত্যাদি। কিন্তু বাস্তবে এগুলোর কোনো অস্তিত্ব নেই। ভুক্তভোগীদের সতর্কবার্তা ময়মনসিংহ ব্লাড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এইচ এম মুমিনুর রহমান জানান, অবৈধ ব্লাড ব্যাংকগুলো রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। তারা স্যালাইন মিশিয়ে এক ব্যাগ রক্ত থেকে তিন-চার ব্যাগ রক্ত বানাচ্ছে। বিশেষ করে নেগেটিভ ব্লাড গ্রুপের ক্ষেত্রে এমন ঘটনার সংখ্যা বেশি। ময়মনসিংহের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ফয়সল আহমেদ বলেন, “এ ধরনের অনিরাপদ রক্ত রোগীদের ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। রক্তের মাধ্যমে রোগীদের এইচআইভি, হেপাটাইটিস-বি-এর মতো মারাত্মক রোগ সংক্রমিত হতে পারে। এ বিষয়ে হাসপাতালগুলোকে আরও সতর্ক হতে হবে।” আইনানুগ ব্যবস্থা এবং অভিযান কোতোয়ালি থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, “গ্রেপ্তারকৃত দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চক্রের অন্য সদস্যদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।” সতর্কতা ও করণীয় সকল রোগী ও তাদের আত্মীয়-স্বজনকে সতর্ক করে বলা হচ্ছে, সরকারি অনুমোদিত ব্লাড ব্যাংক ছাড়া অন্য কোথাও থেকে রক্ত সংগ্রহ করবেন না। তা না হলে রক্ত নেওয়া রোগীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। সতর্ক হোন, অন্যদের সতর্ক করুন এবং নিরাপদ রক্তের জন্য শুধু সরকারি অনুমোদিত ব্লাড ব্যাংককে বিশ্বাস করুন।
コメントがありません