close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

এ সরকার দেশের স্বার্থ বিক্রি করার জন্য আসেনি , নৌপরিবহন উপদেষ্টা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সরকার দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিচ্ছে না—চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনায় নৌবাহিনীকে সাময়িক দায়িত্ব, বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে এখনো চুক্তি হয়নি বলে জানালেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।..

চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনা নিয়ে চলমান আলোচনা ও গুজবের প্রেক্ষিতে নৌপরিবহন ও শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই সরকার দেশের স্বার্থ বিক্রি করতে আসেনি। বরং দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও জনগণের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার অত্যন্ত সতর্ক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।

বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব মন্তব্য করেন উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে এনসিটি পরিচালনার পূর্ণ কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা অপারেটর নিয়োগ করবে। তবে এই মুহূর্তে সরকার আগামী ৬ মাসের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে এনসিটির দায়িত্ব প্রদানের কথা বিবেচনা করছে।”

তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, “যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ইতোমধ্যে টার্মিনালে কাজ করছেন, তাদের চাকরির কোনো ধরনের ক্ষতি হবে না। বরং প্রয়োজন হলে নৌবাহিনী পূর্ববর্তী অভিজ্ঞ অপারেটরদের সহায়তাও নিতে পারবে।”

চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনা নিয়ে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির গুজবকে খণ্ডন করে উপদেষ্টা বলেন, “এখন পর্যন্ত কোনো বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়নি। দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে এমন কিছু কখনোই করা হবে না। যে কোম্পানির সঙ্গেই আলোচনা হবে, তাদের কাজ হবে শুধুমাত্র নির্ধারিত মেয়াদে অপারেশন পরিচালনা করা। সার্বিক মালিকানা থাকবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হাতে।”

তিনি আরও বলেন, “দুবাই পোর্ট ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে এনসিটি পরিচালনা বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা চলছে। তবে সেটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণেই হবে এবং বিশ্বের অন্যান্য উন্নত বন্দরের মতোই কার্যক্রম পরিচালনার মডেল অনুসরণ করা হবে।”

ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “আন্তর্জাতিক মানের অপারেটর নিয়োগ দিলে বন্দর কার্যক্রমে গতি আসবে। বর্তমানে যেখানে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজার টিইইউস (TEUs) কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়, তা ৬ হাজারে উন্নীত হবে। অর্থাৎ ১৫% থেকে ২০% বার্ষিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।”

তিনি জানান, এতে করে পণ্য খালাসের সময় কমবে, খরচ হ্রাস পাবে, বড় জাহাজ ভিড়বে এবং নতুন নতুন নৌ রুট সৃষ্টি হবে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বন্দর পরিচালনা নিশ্চিত হবে, যা দেশের আমদানি-রপ্তানির পরিধি ও সক্ষমতা বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, “বর্তমানে সাইফ পাওয়ারটেকের সঙ্গে বন্দরের অন্যান্য কার্যক্রমে যে চুক্তি রয়েছে, তা অপরিবর্তিত থাকবে। এনসিটি অপারেশনকে আলাদা ভাবেই দেখা হবে, এবং এরই মধ্যে যাবতীয় নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে।”

চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনৈতিক লাইফলাইন হিসেবে বিবেচিত। এমন সংবেদনশীল ইস্যুতে সরকার যে কোনো ধরনের মালিকানা হস্তান্তর বা স্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত থেকে দূরে থাকছে, তা এই বক্তব্যেই স্পষ্ট। দেশীয় কর্তৃত্ব বজায় রেখে দক্ষতার সঙ্গে বন্দরের কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার এই পরিকল্পনা নিঃসন্দেহে দেশের উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

Aucun commentaire trouvé


News Card Generator