close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

দুর্নীতিতে জড়িতদের রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে- আসিফ মাহমুদ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
দলীয় পরিচয় নয়, আইনের শাসনই হবে মাপকাঠি—সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে দুদককে আহ্বান করলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। নিজের ঘনিষ্ঠজনের বিরুদ্ধেই নিলেন কঠোর অব..

নিজের ঘনিষ্ঠজনের বিরুদ্ধেই কঠোর অবস্থান নিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। দুর্নীতির অভিযোগ উঠতেই তিনি স্বপ্রণোদিতভাবে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। এতে প্রমাণিত হলো, সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান শুধু কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বাস্তব পদক্ষেপেও প্রতিফলিত হচ্ছে।

শনিবার (২৪ মে) বিকাল সাড়ে ৪টায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, তার সাবেক একান্ত সচিব (এপিএস) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের জন্য তিনি নিজেই দুদককে অনুরোধ করেছেন।

উপদেষ্টা বলেন, “অভিযোগ এবং গুঞ্জন উঠলে আমি নিজেই বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানের অনুরোধ করেছি। মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আমি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছি—এই অনুসন্ধানে সর্বাত্মক সহযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, “যে-ই হোক না কেন, যদি কেউ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবেই। এটি শুধু আমার অবস্থান নয়, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার।”

এই ঘোষণায় প্রশাসন এবং জনগণের মধ্যে ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়েছে। কারণ, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক পরিচয়কে আশ্রয় করে দুর্নীতিকে রক্ষা করার অভিযোগ থাকলেও এবার উচ্চপদস্থ কেউ নিজেই তার সাবেক ঘনিষ্ঠ সহযোগীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন।

তিনি দাবি করেন, “শুরু থেকেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে বিভ্রান্তিকরভাবে জড়িয়ে একটি পারসেপশন তৈরির চেষ্টা চলছে। কিন্তু আমি সত্য, নৈতিকতা এবং জবাবদিহিতায় বিশ্বাসী। তাই আমি নিজেই দুদকের কাছে আবেদন করেছি যেন তারা নিরপেক্ষ ও পেশাদারিভাবে অনুসন্ধান পরিচালনা করে।”

এই প্রেক্ষাপটে উপদেষ্টার বক্তব্য আরও দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দেয়। তিনি বলেন, “আমরা এমন এক দৃষ্টান্ত রেখে যেতে চাই যা হবে অনুসরণযোগ্য—সততা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার একটি মডেল। আমি চাই, মানুষ দেখুক আমরা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছি না, বরং তা নির্মূলে সক্রিয়।”

উল্লেখ্য, উপদেষ্টার সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি দপ্তরে প্রভাব খাটিয়ে তদবির বাণিজ্যের মাধ্যমে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিস্তারিত তথ্য গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ এপ্রিল তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এরপর দুর্নীতি দমন কমিশন এই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা অভিযোগের যথার্থতা যাচাই করতে বিভিন্ন দপ্তরে তথ্য চেয়েছে এবং অচিরেই সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এই পদক্ষেপকে অনেকে দেখছেন সরকারের দুর্নীতিবিরোধী দৃঢ় অবস্থানের বাস্তব প্রতিফলন হিসেবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি এই তদন্ত সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ হয়, তাহলে প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পথ আরও প্রসারিত হবে।

একইসাথে এই ঘটনা একটি বার্তা দিচ্ছে—আস্থাভাজন বলেই কেউ রেহাই পাবে না। অপরাধ করলে, আইনের মুখোমুখি হতেই হবে।

Комментариев нет