ঝড়ের আঘাত হানতে পারে আজই: ১১ জেলায় সতর্কতা জারি করলো আবহাওয়া অফিস
আজ সোমবার, ২ জুন—দেশজুড়ে গরম ও মেঘলা আবহাওয়ার মাঝে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে আবহাওয়া অফিসের সতর্কবার্তা। সকাল থেকেই আকাশ মেঘলা, আর এর মধ্যেই দুপুর ১টার মধ্যে দেশের অভ্যন্তরীণ ১১টি অঞ্চলে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড়ো হাওয়া এবং বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, রাজশাহী, পাবনা, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া, বরিশাল, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট জেলার ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এই ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি এবং বজ্রপাতও ঘটতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
এমন অবস্থায় এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এর মানে হলো, নৌযান ও নদীপথে চলাচলকারী সাধারণ যাত্রী ও মালবাহী নৌকাগুলোকে অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে। হঠাৎ ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়লে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বাড়তে পারে।
এ প্রসঙ্গে আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রপাতের সম্ভাবনা থাকায় নদীবন্দরগুলোর জন্য এক নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে। দুপুর ১টা পর্যন্ত এই অবস্থা বিরাজ করতে পারে।”
সারাদেশে ঝড়-বৃষ্টির ধারাবাহিকতা চলবে
এটা একদিনের ব্যাপার নয়—আবহাওয়া অধিদফতরের আরেকটি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী কয়েক দিন দেশের প্রায় সব বিভাগেই একই ধরনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। অর্থাৎ ঝড়ো হাওয়া, বিদ্যুৎ চমকানো বজ্রপাত এবং বৃষ্টিপাত থাকবে চলমান। কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারি ধরনের বর্ষণও হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
বিশেষ করে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলে জলবায়ুর আচরণ অতীতেও বেশি রুদ্র হয়ে উঠেছিল। এসব অঞ্চল উপকূলীয় এবং পাহাড়ি হওয়ায় বজ্রপাত এবং হঠাৎ সৃষ্ট বন্যার ঝুঁকি বেশি থাকে।
কৃষি ও জনজীবনে প্রভাব পড়ার শঙ্কা
আবহাওয়ার এই ধরনের আচরণ শুধু যাত্রীদেরই নয়, কৃষকদের জন্যও আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক এলাকায় ধান কাটা ও শুকানোর কাজ এখনো শেষ হয়নি। হঠাৎ বৃষ্টি ও ঝড় হলে ধান পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তাছাড়া, যেসব এলাকায় খোলা মাঠে নানা ফসলের চাষ চলছে, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালীন সবজি—ঝড়ের দাপটে সেসব ফসল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় কৃষি অফিসগুলোকে আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
করণীয় কী?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময়ে খোলা জায়গায় না যাওয়াই ভালো। বজ্রপাতের সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার না করা, খোলা মাঠ, নদী বা উঁচু গাছের নিচে অবস্থান না করাই নিরাপদ।
নৌযান চালক ও যাত্রীরা যেন আবহাওয়ার সতর্কতা মেনে চলেন, সে আহ্বান জানানো হয়েছে। অনেক সময় ছোট নৌকা ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়, যার ফলে প্রাণহানি ঘটে।
দুপুরের মধ্যেই ১১ জেলার উপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে যেতে পারে তার পূর্বাভাসকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। আগাম প্রস্তুতি ও সতর্কতা থাকলে প্রাণ ও সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব।