দুই দেশের সম্পর্ক বাড়াতে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দোভালের বৈঠক..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
চীনে ওয়াং ই-এর সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার ও সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতায় গুরুত্ব দেন ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। দুই দেশ বিমান ও ভিসা পরিষেবা চালুর বিষয়ে একমত।..

ভারত-চীন সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝে এবার দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ে মুখোমুখি বৈঠক হলো বেইজিংয়ে। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত দোভাল এবং চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর মধ্যে অনুষ্ঠিত এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে উঠে এসেছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন, জনগণের মধ্যে সম্প্রীতি, এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

দুই নেতার এই বৈঠক কেবল কূটনৈতিক সৌজন্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এতে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক ইস্যু নিয়ে গভীর আলোচনা হয়। একে অপরের প্রতি আস্থা ফেরানোর প্রয়াসে তারা দুই দেশের মধ্যে বিমান পরিষেবা পুনরায় চালু, ভিসা সুবিধা সম্প্রসারণ, এবং মিডিয়া ও গবেষণা সংস্থা (থিঙ্ক ট্যাঙ্ক) বিনিময়ের মতো বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে একমত হন।

বৈঠকে অজিত দোভাল স্পষ্টভাবে বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই এখন দুই দেশের জন্যই অগ্রাধিকার। এই লড়াই কেবল অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষায় নয়, বরং অঞ্চলজুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে অপরিহার্য। চীনের প্রতি ভারতের এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে একাধিক জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে এটি সামনে এসেছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (MEA) বিবৃতি অনুসারে, আলোচনায় ভবিষ্যতে স্পেশাল রিপ্রেজেন্টেটিভ (SR) পর্যায়ে ২৪তম বৈঠক ভারতের মাটিতে করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ওয়াং ই-কে। এটি এই কূটনৈতিক চেষ্টার ধারাবাহিকতা রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বর্তমানে ভারত-চীন সরাসরি বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এই বৈঠকে দুই দেশ দ্রুত বিমান পরিষেবা চালুর বিষয়ে সম্মত হয়েছে, যা ব্যবসা, শিক্ষা ও পর্যটনের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একইসাথে, ভিসা নীতিতে সহজতা এবং সাংবাদিক ও থিঙ্ক ট্যাঙ্ক পর্যায়ে বিনিময় বৃদ্ধির কথাও আলোচনা হয়েছে

বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপগুলো যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে কেবল রাষ্ট্রীয় স্তরেই নয়, সাধারণ জনগণের মধ্যেও সৌহার্দ্য ও সম্পর্ক পুনঃগঠনের সূচনা হতে পারে।

গত কয়েক বছর ধরেই ভারত-চীন সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ। গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক স্তরে একাধিকবার আলোচনার চেষ্টা হয়েছে, তবে প্রত্যাশিত অগ্রগতি ছিল না। এই নতুন বৈঠক তাই অনেকটাই বরফ গলানোর মতো একটি উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আলোচনা যদি কার্যকর পরিকল্পনায় রূপ নেয়, তবে সেটি এশিয়ার এই দুই পরাশক্তির মধ্যে নতুন ভারসাম্য তৈরি করবে। তবে এই প্রক্রিয়ায় সময় লাগবে এবং উভয়পক্ষকেই সতর্ক ও বাস্তববাদী থাকতে হবে।

বেইজিংয়ে দোভাল-ওয়াং বৈঠক একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছে — সহযোগিতা ও স্থিতিশীলতা এখন সময়ের দাবি। সম্পর্কের জট খুলতে হলে এমন আন্তরিক ও কৌশলী আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে। আগামী মাসগুলোতে এই উদ্যোগ কোন দিকে গড়াবে, তা দেখার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে আন্তর্জাতিক মহল।

Tidak ada komentar yang ditemukan


News Card Generator