close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন যুগের সূচনা: বিজয়ের পরবর্তী পরিবর্তনশীল রাজনীতি

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ডোনাল্ড ট্রাম্প, আমেরিকার ইতিহাসে প্রথমবার নির্বাচিত হয়ে, দ্বিতীয়বার পরাজিত হয়ে, এবং তৃতীয়বার এসে ভূমিধস বিজয়ের মাধ্যমে চিরকালীন ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। তার রাজনৈ
ডোনাল্ড ট্রাম্প, আমেরিকার ইতিহাসে প্রথমবার নির্বাচিত হয়ে, দ্বিতীয়বার পরাজিত হয়ে, এবং তৃতীয়বার এসে ভূমিধস বিজয়ের মাধ্যমে চিরকালীন ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। তার রাজনৈতিক উত্থান এবং পতনের পথে ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনা এখন ইতিহাসের অংশ। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদকাল অনেকের মতে, একটি নতুন যুগের সূচনা হতে পারে, যা শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের নয়, বরং বিশ্বের রাজনৈতিক অঙ্গনেও গভীর প্রভাব ফেলবে। তার নীতি, চিন্তা-ভাবনা এবং কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত বিশ্ব রাজনীতি এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি পেতে পারে। দ্বিতীয় মেয়াদে পরিবর্তন আসবে কোথায়? প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি অনুসরণ করে বাণিজ্য চুক্তি, অভিবাসন নীতি, এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তার দ্বিতীয় মেয়াদে এই নীতিগুলি আরও শক্তিশালী হতে পারে। বিশেষত, অভিবাসন নীতি এবং সীমান্ত নিরাপত্তা বিষয়ে তিনি আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে। বাণিজ্য চুক্তি এবং বিশেষ করে চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরও কঠোর নীতি দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকেই ধারণা করছেন। তবে এই পদক্ষেপগুলির সম্ভাব্য ফলাফল হবে অত্যন্ত জটিল। তার বাণিজ্য নীতি কিছু ক্ষেত্রে আমেরিকার অর্থনীতি শক্তিশালী করতে পারে, কিন্তু বৈশ্বিক বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন সংকটের সূচনা হতে পারে। এর প্রভাব শুধু আমেরিকায় নয়, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এক বিপর্যয়ের জন্ম দিতে পারে। ট্রাম্পের প্রশাসনিক নীতি এবং তার অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে প্রশাসনিক কাঠামোর অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম আরও কঠিন হতে পারে। তিনি গণমাধ্যম এবং সংস্থাগুলির প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রশাসন পরিচালনা করতেন। এই পরিস্থিতি আরও ব্যাপক হতে পারে, এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও প্রশাসনিক কাঠামোর উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে। ট্রাম্পের ‘টেকনোলজি কন্ট্রোল’ নীতির উপরও জোর দেওয়া হতে পারে, যা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলির উপর বিধিনিষেধ আরোপ বা তাদের নিয়ন্ত্রণ কঠোর করার লক্ষ্যে পরিচালিত হতে পারে। এর ফলে আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সংস্থাগুলির সঙ্গে যুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কেও পরিবর্তন আসবে। পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন অপরদিকে, ট্রাম্পের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত নীতিতে পরিবেশগত নিয়ম শিথিল করার মাধ্যমে শিল্প ও জ্বালানি উৎপাদনকে প্রাধান্য দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এর ফলে পরিবেশগত ক্ষতি হতে পারে, তবে আমেরিকার শক্তিশালী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য এই পদক্ষেপগুলির প্রয়োজনীয়তা মনে করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত ট্রাম্পের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ন্যাটো এবং অন্যান্য সংস্থার প্রতি তার বিরূপ মনোভাব আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এই অবস্থায় বৈশ্বিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে এক বড় সংকট সৃষ্টি হতে পারে, যা বিশ্ব রাজনীতিতে এক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করতে পারে। একই সময়, সুপ্রিম কোর্ট এবং ফেডারেল কোর্টে রক্ষণশীল বিচারকদের সংখ্যা বাড়ানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থায় দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব বিস্তার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তার সমর্থকরা মনে করেন, দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প আমেরিকার অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবেন, কিন্তু সমালোচকেরা আশঙ্কা করছেন যে, তার নীতিসমূহ যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করবে এবং বৈশ্বিক রাজনীতিতে দেশটির প্রভাব কমিয়ে দেবে। ট্রাম্পীয় স্টাইল: 'ট্রাম্পিজম' ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক দর্শন, বা ‘ট্রাম্পিজম’, একটি তীব্র জাতীয়তাবাদী দর্শন হিসেবে পরিচিত, যা যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে শ্বেতাঙ্গদের আত্মপরিচয় এবং সুরক্ষার প্রশ্নকে উত্থাপন করেছে। তার এই দর্শন দেশের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে, তবে তার সমর্থকদের কাছে এটি এক ধরনের মধুর সুর হয়ে উঠেছে। শেষ কথা ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদকাল সত্যিই একটি নতুন যুগের সূচনা হতে পারে কিনা, তা সময়ই বলবে। তবে তার রাজনৈতিক স্টাইল এবং কার্যক্রম একেবারেই আলাদা, যা তাকে অন্য সব রাজনীতিবিদদের থেকে বিশেষভাবে পৃথক করে তোলে। ট্রাম্পের ‘টর্নেডো’ বিজয়, যা সবাই একসময় প্রত্যাশা করেনি, তা এখন ইতিহাসের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্ব কীভাবে বদলে যাবে, এবং তার নীতি কি পৃথিবীকে এক নতুন পথে পরিচালিত করবে? সময়ের সঙ্গে আমরা সেই উত্তর পেতে থাকব।
Nema komentara