মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত শেখ হাসিনাকে ফেরানোর অনুরোধ নিয়ে ভারত এতদিন নীরব থাকলেও প্রত্যর্পণ চুক্তির 'রাজনৈতিক প্রকৃতি' সংক্রান্ত ধারা কাজে লাগিয়ে দিল্লির পক্ষে তা নাকচ করার সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার অনুরোধ নিয়ে ভারত সরকারের ওপর এখন তীব্র কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে। গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সরকার অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে ভারতকে শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের জন্য একটি আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক পত্র (নোট ভার্বাল) পাঠালেও, ভারত সেটি নিয়ে আজ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অবস্থান ঘোষণা করেনি।
বিবিসি বাংলার সূত্র অনুযায়ী, নোট ভার্বালটি পাওয়ার দুদিনের মধ্যেই প্রাপ্তি স্বীকার করা হলেও দিল্লি সম্পূর্ণ নীরব ছিল। তবে, ভারতের পররাষ্ট্র এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা একান্ত আলোচনায় বারবার ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ২০১৩ সালে স্বাক্ষরিত এবং ২০১৬ সালে সংশোধিত প্রত্যর্পণ চুক্তির বহু ফাঁকফোকর কাজে লাগিয়ে এই অনুরোধ নাকচ করে দেওয়া বা দীর্ঘ সময়ের জন্য ঝুলিয়ে রাখা সম্ভব।
ভারতের কর্মকর্তাদের প্রাথমিক আপত্তির কারণ ছিল শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানো হলে তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে পারেন এবং ন্যায়বিচার নাও পেতে পারেন। গত ডিসেম্বরে যখন অনুরোধটি পাঠানো হয়, তখন তাঁর বিরুদ্ধে মামলা কেবল শুরু হয়েছিল। কিন্তু এখন তিনি আদালতের রায়ে দণ্ডিত হওয়ায় পরিস্থিতি ভিন্ন। এখন একজন দণ্ডিত অপরাধীকে দিনের পর দিন আশ্রয় দেওয়ার কৈফিয়ত দিতে দিল্লিকে হয়তো দ্রুতই মুখ খুলতে হবে।
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ভারত এখন এই যুক্তিতে অনুরোধ খারিজ করতে পারে যে, ‘অভিযোগগুলো শুধু ন্যায়বিচারের স্বার্থে, সরল বিশ্বাসে আনা হয়নি।’ প্রত্যর্পণ চুক্তির এই ধারাটি প্রয়োগ করে তারা সহজেই হস্তান্তরের অনুরোধ নাকচ করে দেবে।



















