close
কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!
ডলারের বাজার ফের অস্থির হয়ে উঠেছে, যা ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সাধারণ অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। গত দুই বছর ধরে ডলারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি অর্থনীতিকে সংকটে ফেলে দিলেও কিছুদিনের স্থিতিশীলতার পর আবারও তা অস্থিরতায় ফিরে গেছে। সরকারের ঘোষণার পর বাজারে ডলারের দর বাড়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে।
ডলার বাজারের অস্থিরতা ও প্রতিযোগিতার হুমকি
বর্তমানে এক ডলারের সরকারি দর ১২৩ টাকা নির্ধারণ করা হলেও খোলাবাজারে তা আরও বেশি। এই দর বৃদ্ধির ফলে আমদানি নির্ভর পণ্যের খরচ বেড়ে যাচ্ছে, যা প্রতিযোগিতায় সক্ষমতাকে হুমকির মুখে ফেলছে। পাশাপাশি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নীতি ও জরিমানা ব্যবস্থা
বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দর নিয়ন্ত্রণে একটি নতুন নীতি চালু করেছে। ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি আয়ের ডলারের জন্য একই দাম প্রযোজ্য হবে। কোনো ব্যাংক এই নির্দেশনা অমান্য করলে জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, আগামী ১২ জানুয়ারি থেকে "ক্রলিং পেগ" নীতি পরিত্যাগ করে দিনে দুইবার ডলারের রেফারেন্স মূল্য নির্ধারণ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ডলার সংকটের ইতিহাস ও বর্তমান চ্যালেঞ্জ
২০২২ সালের মার্চ থেকে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি শুরু হয়, যা ৮৬.২০ টাকা থেকে বর্তমান ১২৩ টাকায় পৌঁছেছে। এ পর্যন্ত ডলারের দর বেড়েছে প্রায় ৪৩ শতাংশ। ব্যাংকগুলো আমদানি দায় মেটাতে সরকারি দরের চেয়ে বেশি দামে ডলার কিনছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।
চক্রের কারসাজি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর ব্যবস্থা
ডলার বাজারে অস্থিরতার পেছনে চক্রের কারসাজি ও ব্যাংকগুলোর অসাধু কার্যক্রম জড়িত। বাংলাদেশ ব্যাংক এ পর্যন্ত ১০টি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও সাতটি মানি চেঞ্জারকে শাস্তি দিয়েছে। তবে পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
ভবিষ্যৎ প্রভাব ও সংশ্লিষ্টদের উদ্বেগ
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ডলার সংকট অব্যাহত থাকলে শিল্পখাত এবং সাধারণ মানুষের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব আরও বাড়বে। আমদানি খরচ বেড়ে গেলে কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি কঠিন হয়ে পড়বে, যার প্রভাব সরাসরি উৎপাদন এবং রপ্তানিতে পড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা জানিয়েছেন, ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে এবং নতুন নির্দেশনার মাধ্যমে ডলার বাজার স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। তবে বাজারের স্থিতিশীলতা আনতে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
বিশ্লেষকদের মতে, ডলার বাজারের এই অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে না আনলে অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা আরও চাপে পড়বে।
Keine Kommentare gefunden