ধোঁকার নিষেধাজ্ঞা নয়, চাই স্থায়ী নিষিদ্ধ ঘোষণা’ — শাহবাগে আহ তদের আন্দোলনে উ ত্তাল ঢাকা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
শাহবাগে ফের উত্তপ্ত জনপদ। আওয়ামী লীগের ওপর কার্যক্রম নিষিদ্ধের ঘোষণাকে ‘প্রহসন’ বলছে জুলাইয়ের আহতরা। তারা চাইছে চিরতরে রাজনৈতিক নিষিদ্ধ ঘোষণা, ঘোষণা প্রকাশ এবং আজীবন চিকিৎসার নিশ্চয়তা। চলছে লাগাতার অব..

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের ঘোষণাকে ‘চোখে ধুলা দেওয়া’ হিসেবে আখ্যায়িত করে শাহবাগে ফের জড়ো হয়েছেন গণআন্দোলনে আহতরা। শনিবার সকাল থেকেই ঢাকার শাহবাগ মোড়ে শুরু হয়েছে তাদের লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি। উদ্দেশ্য—আওয়ামী লীগকে চিরতরে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করা, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ অবিলম্বে প্রকাশ করা, এবং আহতদের আজীবন চিকিৎসার নিশ্চয়তা আদায়।

সকালের প্রথম প্রহরেই শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন আহতরা। তাদের বেশিরভাগই গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে সরকারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থনের সময় আহত হন। শাহবাগের চারপাশে ছড়িয়ে পড়া অবরোধে বন্ধ হয়ে গেছে বড় যানবাহনের চলাচল, সৃষ্টি হয়েছে যানজট। সাধারণ জনগণের চলাচলে সৃষ্টি হয়েছে চরম ভোগান্তি, তবে আন্দোলনকারীরা দাবিতে অনড়।

আন্দোলনকারীদের মতে, সরকার আওয়ামী লীগের ‘কার্যক্রম নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করলেও সেটি আসলে একটি ‘প্রতারণামূলক কৌশল’। তারা দাবি করছেন, দলটির শুধুমাত্র কর্মসূচি নয়, রাজনৈতিক স্বীকৃতিই বাতিল করতে হবে। তাদের মতে, আওয়ামী লীগকে চিরতরে নিষিদ্ধ ঘোষণা ছাড়া দেশের রাজনীতিতে প্রকৃত পরিবর্তন সম্ভব নয়।

আন্দোলনকারীরা আরও অভিযোগ করেন, সরকার আজও আহতদের জন্য কোনো স্থায়ী চিকিৎসা সহায়তা বা নিরাপত্তা পরিকল্পনা ঘোষণা করেনি। আহতদের অনেকেই এখনও শারীরিকভাবে চলাফেরায় অক্ষম, কেউ কেউ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। অথচ তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব রাষ্ট্র নেননি বলেই অভিযোগ তাদের।

এছাড়াও আন্দোলনকারীরা ‘জুলাই স্পিরিট’ বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তাদের ভাষায়, “যদি সত্যিই সরকার জুলাইয়ের গণআন্দোলনের চেতনা বাস্তবায়নে আগ্রহী হয়, তাহলে ঘোষণাপত্র প্রকাশে এত বিলম্ব কেন?”

তিনটি মূল দাবি সামনে রেখে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছে, দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তাদের এই তিনটি প্রধান দাবি হলো:

১. আওয়ামী লীগকে চিরতরে রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।
২. ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ অবিলম্বে প্রকাশ করা।
৩. আহতদের জন্য আজীবন চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের নিশ্চয়তা।

অবরোধের কারণে শাহবাগ, নিউমার্কেট, বাংলামোটর এবং আশপাশের এলাকায় যানবাহন চলাচলে চরম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ এবং রোগীরা পড়েছেন বিপাকে। তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, “দেশকে আওয়ামী মুক্ত করতে কিছু ভোগান্তি মেনে নিতেই হবে।”

এদিকে প্রশাসনও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনো ধরণের পুলিশি হস্তক্ষেপ দেখা যায়নি। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান কর্মসূচি চলবে, কিন্তু সরকার যদি ‘ভাঁওতা রাজনীতি’ চালিয়ে যায়, তাহলে তারা কঠোরতর কর্মসূচিতে যাবেন।

উপসংহারে, আন্দোলনকারীদের চোখে এটি আর কেবল রাজনৈতিক ইস্যু নয়—এটি অস্তিত্বের লড়াই। তারা চাইছে রাজনীতি থেকে পুরোনো ও বিতর্কিত দলসমূহের স্থায়ী বিদায়। আর সেই দাবি পূরণ না হলে, শাহবাগ থেকে আরেকটি গণআন্দোলনের আগুন ছড়িয়ে পড়বে দেশজুড়ে—এমনটাই বার্তা তাদের কণ্ঠে।

Nenhum comentário encontrado


News Card Generator