close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ঢাকার রাজপথে আওয়ামী লীগের মৃত্যু হয়েছে, আর দাফন হয়েছে দিল্লিতে: সালাহউদ্দিন আহমেদ..

Akhi Islam avatar   
Akhi Islam
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গম্ভীর অভিযোগ তুলে বলেন, ‘রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটেছে ঢাকার রাজপথে, দাফন হয়েছে দিল্লিতে।’ তিনি জাতিসংঘের প্রতিবেদন ও অতীত ইতিহাস তুলে ধরে আওয়ামী লীগকে ..

ঢাকার রাজপথে আওয়ামী লীগের মৃত্যু, আর দাফন হয়েছে দিল্লিতে— সালাহউদ্দিন আহমেদের বিস্ফোরক বক্তব্য

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ আওয়ামী লীগ সরকারকে এক হাত নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু ঢাকার রাজপথেই ঘটেছে, আর তাদের দাফন হয়েছে দিল্লিতে।”

রোববার এক রাজনৈতিক সমাবেশে বক্তৃতা দিতে গিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ এ বক্তব্য দেন। তার ভাষ্যমতে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতার অপমৃত্যু ঘটিয়েছে বর্তমান সরকার। তিনি জাতিসংঘের একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদন উল্লেখ করে বলেন, "মহারাষ্ট্র মডেল" অনুসরণ করে বাংলাদেশে প্রায় ১,৪০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৬ শতাংশ ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়েছে মারণাস্ত্র, এমনকি হেলিকপ্টার গানশিপ থেকেও গুলি চালানো হয়েছে সাধারণ জনগণের ওপর।

আন্তর্জাতিক বিচারের দাবি

সালাহউদ্দিন বলেন, “আমরা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী আওয়ামী লীগকে একটি ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দল হিসেবে বিচার করার দাবি জানাচ্ছি। মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণহত্যার জন্য শুধু ব্যক্তিকে নয়, রাজনৈতিক দলকেও বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।”

তিনি আরও বলেন, শুধু জুলাই মাসের ঘটনাই নয়, বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার প্রায় ৭ হাজারের বেশি বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষকে হত্যা, গুম ও নির্যাতন করেছে। এসব ঘটনা বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ।

আওয়ামী লীগের ইতিহাসে 'গণতন্ত্র হত্যা'র নজির

আওয়ামী লীগের ইতিহাস প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, “দলটি জন্মলগ্ন থেকেই একদলীয় শাসনের দিকে ধাবিত হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারিতে মাত্র ১৩ মিনিটে সংবিধান পরিবর্তন করে বাকশাল গঠন করা হয়েছিল, যা ছিল গণতন্ত্র হত্যার একটি নির্লজ্জ প্রচেষ্টা।”

তিনি বলেন, “২০২৪ সালে গণআন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষের ওপর গুলিবর্ষণ করে যে রক্তাক্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে, তা-ই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যুকে সিলমোহর দিয়েছে।”

অর্থনৈতিক দুর্নীতির চিত্র

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কার অর্থনৈতিক দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ‘সাদা কাগজ কমিটি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৫ বছরে ব্যাংকিং খাতে লক্ষ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ সৃষ্টি হয়েছে, যা দিয়ে অন্তত ২৪টি পদ্মা সেতু তৈরি করা সম্ভব হতো।”

তিনি আরও দাবি করেন, গত ১৫ বছরে ২৯ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ বিদেশে পাচার হয়েছে, যা দেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। প্রতিবছর লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে অথচ সরকার কোনো ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে।

‘আওয়ামী লীগ এখন ইতিহাসের পাতায়’

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এইসব অনাচার, দমন-পীড়ন, অর্থনৈতিক দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ডই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক পতনের কারণ হয়েছে। আজ বাংলাদেশের মানুষ বুঝে গিয়েছে— তাদের স্বাধীনতা কাদের হাতে নিরাপদ নয়।”

তিনি আরও বলেন, “জনগণ আজ মুক্ত হতে চায়, আওয়ামী লীগের শাসন নয়। দেশকে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে হলে এই ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটা আবশ্যক।”


 

সালাহউদ্দিন আহমেদের এ বক্তব্য বর্তমান রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আওয়ামী লীগ কিংবা সংশ্লিষ্ট মহল থেকে এখনও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদন এবং বিরোধী দলের এসব দাবির ভিত্তিতে সরকারকে জবাবদিহির মুখে পড়তে হতে পারে।

এই প্রতিবেদনটি তুলে ধরেছে বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতার এক বিস্ফোরক দিক— যে দিকটি উপেক্ষা করা কঠিন।

Walang nakitang komento