এই বছরের পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার মতে, এ বছর দেশের জন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি সতর্ক থাকার সময় এসেছে। এজন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মতো প্রস্তুত ও সতর্ক থাকতে হবে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নিরাপত্তা প্রধানদের সঙ্গে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এই নির্দেশনা দেন। বৈঠকে তিনি জানান, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকে সর্বোচ্চ আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হতে হবে। তিনি আরো বলেন, একটি শক্তিশালী কমান্ড সেন্টার বা কমান্ড সদর দপ্তর স্থাপন করা উচিত, যা পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় সাধন করবে।
যুদ্ধকালীন প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা
ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, “নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর মধ্যে দক্ষতা ও নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সমন্বয় সাধন করা হবে। এই কমান্ড কাঠামো সব বাহিনী ও থানার মধ্যে সমন্বয় তৈরি করবে, যাতে দেশের পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।”
তিনি আরও সতর্ক করে দেন যে, যেকোনো চেষ্টা যাতে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করতে না পারে, সে বিষয়ে কঠোর নজর রাখা হবে। “যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মতো আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে, এই বছরটি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার সুযোগ দেওয়া যাবে না,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
অপপ্রচার ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রচেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করছে এবং মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। তিনি দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে এবং অপপ্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানান।
মানবাধিকার রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা
নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানদের মানবাধিকার সুরক্ষায় বিশেষভাবে সচেতন থাকার নির্দেশ দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বিশেষভাবে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন। “যদি আমরা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে না পারি, তবে আমাদের বৈশ্বিক ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে,” বলেন তিনি।
রমজান মাসে খাদ্য মূল্য স্থিতিশীল রাখার নির্দেশনা
পুলিশকে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এমন অভিযান চালাতে হবে যাতে রমজান মাসে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখা যায়।”
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, ডিএমপি, কোস্ট গার্ড ও বিশেষ শাখার প্রধানরা।
এখন দেশের নিরাপত্তা বাহিনী একে অপরের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করবে এবং সম্ভাব্য যে কোনো বিশৃঙ্খলা প্রতিহত করতে প্রস্তুত থাকবে।
कोई टिप्पणी नहीं मिली



















