দেশে ফিরেই বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
এক বছর যুক্তরাষ্ট্রে থাকার পর দেশে ফিরলেন চট্টগ্রামের আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন। কিন্তু বিমানবন্দরে পা দিতেই তাকেও গ্রেপ্তার করা হলো! কীসের মামলা? কেন এই হঠাৎ গ্রেপ্তার? জানুন চমকে যাওয়ার মত..

আমেরিকা ফেরত আওয়ামী লীগ নেতা দেশে ফিরেই গ্রেপ্তার — রহস্য ঘেরা অভিযান ঘিরে আলোচনার ঝড়

ঢাকা, ২৩ মে:
একটি মামলার সূত্র ধরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিনকে। তিনি দীর্ঘ এক বছর যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করে শুক্রবার ভোররাতে স্ত্রীসহ দেশে ফিরেছিলেন।

ঘটনাটি ঘটে ২৩ মে ভোর ৫টার দিকে, যখন আমেরিকা থেকে আগত বিমানের যাত্রী হিসেবে গিয়াস উদ্দিন ও তার স্ত্রী ঢাকা বিমানবন্দরে নামেন। ঠিক তখনই ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আলাদা করে ডাকে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে আটক করে। এরপরই শুরু হয় নানা প্রশ্ন। কীসের ভিত্তিতে তাকে এই গ্রেপ্তার? কোন মামলায় তিনি অভিযুক্ত? কেন এত গোপনীয়তা?

গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী তাহমিনা গিয়াস গণমাধ্যমকে জানান, "আমরা প্রায় এক বছর আমেরিকায় ছিলাম। দেশে ফেরার পরই এমন আচমকা ঘটনা ঘটবে কল্পনাও করিনি। বিমান থেকে নামার পরপরই ইমিগ্রেশন পুলিশ আমাদের থামিয়ে দেয় এবং আমার স্বামীকে গ্রেপ্তার করে। এরপর কোনো বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে সরাসরি চট্টগ্রামের পথে নিয়ে যাওয়া হয়।"

এদিকে মিরসরাই থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ডিউটি অফিসার) এসআই রাজিয়া আক্তার বলেন, “আমি এখনো পর্যন্ত এই গ্রেপ্তারের ব্যাপারে কোনো অফিসিয়াল তথ্য পাইনি। তবে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিচ্ছি।”

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মিরসরাই থানায় গিয়াস উদ্দিনের নামে একটি মামলা রয়েছে এবং সেই মামলারই পরিপ্রেক্ষিতে এই গ্রেপ্তার। তবে মামলার বিস্তারিত ধারা, অভিযোগ বা এর পেছনে রাজনৈতিক কোনো প্রেক্ষাপট আছে কি না—সে বিষয়ে এখনো কিছু প্রকাশ করা হয়নি।

গিয়াস উদ্দিনের রাজনৈতিক পরিচিতি এবং এলাকায় তার প্রভাবের কথা বিবেচনা করলে এই গ্রেপ্তার অনেকের কাছে চমকপ্রদ ও অপ্রত্যাশিত মনে হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি ঘিরে চলছে তুমুল আলোচনা। অনেকে বলছেন, এটি রাজনৈতিক কোনো প্রতিশোধের অংশ হতে পারে, আবার কেউ কেউ মনে করছেন এটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর স্বাভাবিক কার্যক্রম।

গোপন অভিযান না কি রাজনৈতিক বার্তা?

এই ঘটনাটি প্রশ্ন তুলেছে—দেশে ফেরা একজন প্রভাবশালী রাজনীতিককে বিমান থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেপ্তার করার পেছনে কী বার্তা দিতে চায় সরকার বা প্রশাসন? এটা কি কোনো বড়সড় তদন্তের অংশ, নাকি আরও কোনো চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে?

বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চট্টগ্রামে যে টানাপোড়েন চলছে, এই গ্রেপ্তার সেই দ্বন্দ্বেরই প্রকাশ হতে পারে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এটি কেবল শুরু মাত্র—পরবর্তীতে আরও বড় নেতাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

শেষ কথা: কী হতে পারে সামনে?

এই মুহূর্তে গিয়াস উদ্দিনকে চট্টগ্রামে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে মামলার বিস্তারিত প্রকাশ না হওয়ায় জনমনে তৈরি হয়েছে একধরনের রহস্য। আগামী দিনগুলোতে যদি এই মামলার বিস্তারিত প্রকাশ হয় বা কোনো চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে, তাহলে এটি হতে পারে চলমান রাজনৈতিক অঙ্গনের বড় একটি ইস্যু।

জনগণ এখন অপেক্ষায়—গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ রয়েছে? কেনই বা এমনভাবে তাকে দেশে ফিরেই আটক করা হলো? সামনে হয়তো উন্মোচিত হবে আরও চমকপ্রদ তথ্য।

コメントがありません