গণ-অভ্যুত্থান দিবসকে ঘিরে সারা দেশে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সিপিবি। পাশাপাশি আগামী ১৯-২২ সেপ্টেম্বর ১৩তম কংগ্রেস আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই দলীয় কর্মকাণ্ড জোরদার করতে এবং জনগণকে আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে দেশব্যাপী কর্মসূচি ও দলের ত্রয়োদশ জাতীয় কংগ্রেসের তারিখ ঘোষণা করেছে।
গত ৪ ও ৫ জুলাই সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির দুই দিনব্যাপী সভা ঢাকার মুক্তিভবনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্টির সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহ আলম। এরপর ৭ জুলাই সোমবার বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
সিপিবির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স সভায় দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট, করণীয় ও সরকারের সংস্কার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা উপস্থাপন করেন। সভার শুরুতেই শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন সম্পাদক লুনা নূর। এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সদস্য-সংগঠক এবং কন্ট্রোল কমিশনের প্রতিনিধিরা।
সভায় ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ‘গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি’ উপলক্ষে দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে সিপিবি। পাশাপাশি আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চার দিনব্যাপী ত্রয়োদশ জাতীয় কংগ্রেস আয়োজন করা হবে। দলটি মনে করছে, বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যে নির্বাচনকালীন সরকারের কাঠামো ও সময়সীমা নির্ধারণ করে অবিলম্বে তারিখ ঘোষণার দাবি জানানো হয়।
সভায় সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটি সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। অব্যাহত মব সন্ত্রাস, খুন, ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এবং এসব ঘটনায় সরকার ও প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণহীনতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি মালিকানায় ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত, রাখাইন করিডর ও দেশের ভেতরে বিদেশি সমরাস্ত্র কারখানা স্থাপনসহ স্টারলিংক প্রকল্পের মতো বিষয়গুলোকে "সাম্রাজ্যবাদী হস্তক্ষেপ" আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে দেশব্যাপী গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। একইসঙ্গে দলটি শ্রমজীবী মানুষের আয় হ্রাস, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বেকারত্ব বৃদ্ধির ফলে জনজীবনের দুর্ভোগ বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে।
সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটি আরও সিদ্ধান্ত নেয় যে, আগামী ১৮ জুলাই ‘শহীদ রেজভী দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হবে।
দলটি আশা করছে, এই ধারাবাহিক কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের অংশগ্রহণ আরও বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের রাজনীতিতে একটি ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে পড়বে।