close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ডেঙ্গু মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ১৯ হাজার কিট দিলো চীন

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আক্রান্ত ১১ হাজার ছাড়াল, মৃত্যু ৪৪। সংকটে চিকিৎসা ব্যবস্থা। এমন সময় ১৯ হাজার ডায়াগনস্টিক কিট সহায়তায় এগিয়ে এলো চীন সরকার।..

বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নতুন করে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। প্রতিদিনই বাড়ছে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। ইতোমধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে এবং মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে ঠেকেছে ৪৪-এ। এই ক্রমবর্ধমান সংকটের মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গু শনাক্ত করার কিটসহ চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব দেখা দিয়েছে। এমন এক দুঃসময়ে বাংলাদেশকে বড়সড় সহায়তা পাঠিয়েছে চীন সরকার — ১৯ হাজার ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট।

এই গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে। ঢাকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে এই উপকরণগুলো হস্তান্তর করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ড. লিউ ইউইন। তিনি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের হাতে কিটগুলো তুলে দেন।

এই ১৯ হাজার কিট দিয়ে শুধু ডেঙ্গুই নয়, চিকুনগুনিয়া রোগও শনাক্ত করা যাবে। এতে বাংলাদেশের রোগ নির্ণয় ও প্রাথমিক চিকিৎসার গতি আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে ড. লিউ ইউইন বলেন, “বাংলাদেশের অনুরোধে চীন সরকার এই সহায়তা পাঠিয়েছে। আমরা সবসময় বাংলাদেশের পাশে আছি এবং ভবিষ্যতেও যেকোনো সংকটে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।” তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্য খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ-চীন অংশীদারত্ব এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক চীন সফরের পর এই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয়েছে।

তিনি জানান, ইতিমধ্যেই গত বছর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ থেকে কিছু রোগী চিকিৎসার জন্য চীনের কুনমিং শহরে গিয়েছিলেন। চীন বাংলাদেশে একটি আধুনিক হাসপাতাল স্থাপন করতে চায় এবং সেই পরিকল্পনার কাজও এগিয়ে চলছে।

অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান এ সময় বলেন, “চীনের এই সহায়তা শুধু কিটে সীমাবদ্ধ নয়, আমরা তাদের কাছে গবেষণা সহায়তাও চেয়েছি। কারণ, তাদের কারিগরি সরঞ্জাম দিয়ে আরও নির্ভুলভাবে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব।” তিনি আরও জানান, চীনের কাছ থেকে গবেষণামূলক ডিভাইস ও ল্যাব সরঞ্জামেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ডা. সায়েদুর রহমান জানান, সরকার ডেঙ্গু মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। যেসব এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি, সেসব অঞ্চলকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। “ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার আগেই মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া নির্দেশনা মেনে চললে অনেকখানি বিপদ এড়ানো সম্ভব,” বলেন তিনি।

চলতি বছর বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞরা। এদিকে জনগণকেও সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে, বিশেষ করে বৃষ্টির পর যেসব জায়গায় পানি জমে থাকে, সেগুলো দ্রুত পরিষ্কার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

চীনের এই সহায়তা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের জন্য সময়োপযোগী এবং তাৎক্ষণিক উপকার বয়ে আনবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। তবে ডেঙ্গু নির্মূলে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার দিকেও সরকারের মনোযোগ প্রয়োজন, নচেত প্রতি বছরই এই সংকট আরও ঘনীভূত হবে।,

No comments found