close
লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!
চট্টগ্রামে ভোজ্যতেলের সংকট ক্রমেই তীব্র আকার ধারণ করছে। বাজারের চাহিদার অর্ধেকও মিলছে না, যার ফলে ক্রেতাদের মধ্যে চরম অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জসহ দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজারগুলোতে বোতলজাত সয়াবিন তেল একপ্রকার উধাও হয়ে গেছে। বিশেষ করে এক ও দুই লিটারের বোতল তেলের সংকট প্রকট। ব্যবসায়ীরা বলছেন, একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে, ফলে সাধারণ জনগণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
তেলের সংকটের কারণ কী?
বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, ভোজ্যতেলের বাজার এখন পুরোপুরি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। স্বাভাবিকভাবে চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে দাম নির্ধারিত হচ্ছে না। বরং পরিকল্পিতভাবে সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে দাম বাড়ানো হচ্ছে।
সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য: পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা চাহিদামতো তেল পাচ্ছেন না। যেখানে ১০০ লিটার তেলের প্রয়োজন, সেখানে সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ৩০-৪০ লিটার।
মিল মালিকদের কৌশল: ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মিল মালিকরা ইচ্ছাকৃতভাবে তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন, ফলে বাজারে তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে।
বিশ্ববাজারের প্রভাব: আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধির ফলে দেশের বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। ইন্দোনেশিয়ায় উৎপাদন সংকট এবং বায়োডিজেলে পাম অয়েলের ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে সংকট আরও বেড়েছে।
ডলার সংকট: দেশে চলমান ডলার সংকটের কারণে আমদানিকারকরা আগের মতো তেল আমদানি করতে পারছেন না।
মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা
গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৮ টাকা বাড়ানো হয়। বর্তমানে বাজারে সয়াবিন তেলের দাম নিম্নরূপ:
বোতলজাত সয়াবিন তেল (১ লিটার): ১৭৫ টাকা (আগে ১৬৭ টাকা)
খোলা সয়াবিন তেল (১ লিটার): ১৫৭ টাকা (আগে ১৪৯ টাকা)
খোলা পাম তেল (১ লিটার): ১৫৭ টাকা (আগে ১৪৯ টাকা)
বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল: ৮৬০ টাকা (আগে ৮১৮ টাকা)
ভবিষ্যতে কী হবে?
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, যদি এই সংকট চলতে থাকে, তবে আসন্ন রমজানে ভোজ্যতেলের ব্যাপক সংকট দেখা দিতে পারে, যা পুরো বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। যদিও বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন তাদের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাহার করেছে, তবুও মিল মালিকরা সরবরাহ স্বাভাবিক করেননি। বরং সংকটকে আরও দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা চলছে।
সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন
সরকার ইতোমধ্যে দুই দফায় শুল্ক-কর কমিয়েছে, কিন্তু এর বাস্তবিক সুফল এখনও বাজারে দেখা যাচ্ছে না। বরং কৃত্রিম সংকটের কারণে দাম আরও বেড়েছে। ভোক্তাদের স্বস্তি ফেরাতে এবং বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটি সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে, যা সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
कोई टिप्पणी नहीं मिली



















