চট্টগ্রাম বন্দর বিক্রি নয়, উন্নয়নের পথে বিদেশি বিনিয়োগ: স্পষ্ট করলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে নানা গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে প্রেস সচিব জানালেন—বন্দর কাউকে দেওয়া হচ্ছে না, বরং উন্নয়নে আসছে ৩ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ। বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে ব্যবস্থাপনার দৃ..

চট্টগ্রাম বন্দর কাউকে দেওয়া হচ্ছে না—এটি একটি গুজব ও বিভ্রান্তিমূলক প্রচার। বাস্তবতা হচ্ছে, সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের আধুনিকীকরণ ও কার্যকারিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকর্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে।
এমন বক্তব্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরকে আমরা কোনো দেশ বা কোম্পানিকে দিচ্ছি না। আমরা চাই, বিশ্বের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ও দক্ষ কোম্পানিগুলো টার্মিনাল ব্যবস্থাপনায় অংশগ্রহণ করুক এবং সেখানে বিনিয়োগ করুক।”

তিনি বলেন, “বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে আধুনিক প্রযুক্তি, দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং আন্তর্জাতিক মানের লগিস্টিকস দরকার। এসব দিক বিবেচনা করেই সরকার উন্নত বিশ্বের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।”

আলোচনার অগ্রগতি প্রসঙ্গে তিনি জানান, ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা চট্টগ্রাম বন্দরে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিদেশি বিনিয়োগকারীরা কোনো মালিকানা পাচ্ছে না। বরং নির্দিষ্ট চুক্তির আওতায় তারা বন্দর ব্যবস্থাপনার নির্দিষ্ট অংশে বিনিয়োগ ও পরিচালনার দায়িত্ব পাবে। এই মডেল আন্তর্জাতিকভাবে সফলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।”

কোথায় ও কীভাবে এসব বিনিয়োগ আসবে?
প্রেস সচিব জানান, মূলত নতুন টার্মিনাল স্থাপন, বিদ্যমান অবকাঠামোর সম্প্রসারণ ও স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেওয়া হবে। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বর্তমানে যে পর্যায়ে আছে, তা দিয়ে ভবিষ্যতের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। এজন্য সরকার একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের অর্থনীতির হৃদপিণ্ড। এটি শুধু দেশের জন্য নয়, প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক ব্যবস্থাপনা ও বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে এটি আঞ্চলিক ট্রানজিট হাবে পরিণত হতে পারে।”

বন্দরের গোপন চুক্তি ও ‘বিক্রি করে দেওয়া’র অভিযোগ প্রসঙ্গে কী বললেন তিনি?
এমন প্রশ্নে প্রেস সচিব দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন, “আমরা কাউকে বন্দর বিক্রি করছি না, বরং উন্নয়নের অংশীদার করছি। যারা এ নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে, তারা হয় অজ্ঞতাবশত করছে, নয়তো উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।”

অনুষ্ঠান প্রসঙ্গ:
রোববার (২৫ মে) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ক্যাপিটাল মার্কেট সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত “সিএমজেএফ টক” শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শফিকুল আলম। সেখানেই তিনি এ সব গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর জাতীয় সম্পদ। এর নিরাপত্তা ও স্বার্থ সুরক্ষায় সরকার সর্বোচ্চ সতর্ক। উন্নয়নের প্রয়োজন থাকলেও জাতীয় স্বার্থে কোনো আপস করা হবে না।”


চট্টগ্রাম বন্দরের ভবিষ্যৎ নিয়ে সম্প্রতি নানা গুঞ্জন ছড়ালেও সরকারিভাবে আজকের এই ঘোষণা স্পষ্ট বার্তা দিল—বন্দর কারো কাছে হস্তান্তর নয়, বরং আধুনিকায়নের জন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ ও দক্ষ ব্যবস্থাপনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

没有找到评论