close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

চসিকের পদোন্নতি পরীক্ষায় ‘ফেল’, তবু জুটল পদোন্নতি!

Abdullah Al Mamun avatar   
Abdullah Al Mamun
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়েও এক উপ-সহকারী প্রকৌশলী সহকারী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।..

 অভিযোগ উঠেছে, ক্ষমতাধর মহলের প্রভাব ও তদবিরেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।

পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তা হলেন রুপক চন্দ্র দাশ। গত ২১ এপ্রিল তাকে উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) থেকে সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) পদে উন্নীত করা হয়। যদিও একই দিনে আরও তিনজনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়, রুপককে নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক—কারণ, ৬ মার্চ অনুষ্ঠিত মৌখিক পরীক্ষায় তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তীর্ণ হননি।

চসিক প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, আটজন প্রার্থীর মধ্যে মাত্র তিনজনকে যোগ্য বিবেচনায় উত্তীর্ণ ঘোষণা করে বাছাই কমিটি। বাকি চারজনকে অকৃতকার্য এবং একজনকে অনুপস্থিত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অকৃতকার্যদের তালিকায় রুপকের নাম ষষ্ঠ নম্বরে ছিল।

মৌখিক পরীক্ষায় ২০ নম্বরের মধ্যে পাস নম্বর ছিল ১০। রুপক চন্দ্র দাশ পেয়েছেন মাত্র ৯—কারিগরি সদস্যদের কাছ থেকে ৪ এবং বাছাই কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে ৫ নম্বর। তাতেই প্রশ্ন উঠেছে, নিয়ম অনুযায়ী উত্তীর্ণ না হয়েও কীভাবে তিনি পদোন্নতি পেলেন?

চসিকের ২০১৯ সালের কর্মচারী চাকরি বিধিমালায় স্পষ্টভাবে বলা আছে, সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) পদে পদোন্নতির জন্য কমপক্ষে আট বছরের অভিজ্ঞতা ও বাছাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক। অথচ এসব মানদণ্ড অতিক্রম না করেই তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, যা অনেকের মতে গুরুতর অনিয়ম ও বিধি লঙ্ঘনের শামিল।

চসিকের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, "রুপক দাশ ছাত্রজীবনে ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, রাজনৈতিক যোগাযোগ কাজে লাগিয়েই তিনি পদোন্নতি পেয়েছেন।"

পদোন্নতি কমিটির সভাপতি ছিলেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সদস্য ছিলেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন, এলজিইডি ও জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্তপত্রে তিনজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য—উপসচিব ফিরোজ মাহমুদ, নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুম আল মামুন এবং সহকারী কমিশনার শাহীদ ইশরাক—তাদের স্বাক্ষর দেননি।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কেউই সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি। এমনকি মেয়রের সঙ্গেও একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের পদোন্নতি শুধুই অনিয়ম নয়, বরং প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় আস্থার সংকট তৈরি করতে পারে। নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষায় অকৃতকার্য প্রার্থীকে পদোন্নতি দেওয়া হলে সেটিকে 'ক্ষমতার অপব্যবহার' হিসেবেই দেখা হয় এবং মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তদন্ত, ব্যাখ্যা তলব বা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

চসিক সূত্রে আরও জানা গেছে, সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) পদে মোট অনুমোদিত পদ সংখ্যা ৬টি। বর্তমানে কর্মরত আছেন ৩ জন, শূন্য ৩টি। অথচ পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে চারজনকে—যার মধ্যে একজন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন। এতে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

No comments found