close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

চরমোনাই পীরের দলে যোগ দেওয়া বিএনপির সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমান বহিষ্কা র..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলনে যোগদানের কয়েকদিনের মধ্যেই বহিষ্কার করা হলো বিএনপির সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমানকে। এই সিদ্ধান্ত ঘিরে বিএনপির অভ্যন্তরে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।..

চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার রেশ কাটতে না কাটতেই বিএনপির কঠোর সিদ্ধান্ত—সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানকে বহিষ্কার করা হয়েছে দল থেকে। পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া ও রাংগাবালী) আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্যকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও আদর্শ পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বেশ কিছু সময় ধরেই বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নিজস্ব মত ও অবস্থান থেকে কাজ করে যাচ্ছিলেন। সম্প্রতি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে, যা দলের অভ্যন্তরে বিস্ময় ও ক্ষোভের জন্ম দেয়।

এই ঘটনার পরপরই মঙ্গলবার (১৩ মে) বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক আনুষ্ঠানিক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মোস্তাফিজুর রহমানকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, “দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের নীতি-আদর্শ পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের কারণে কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলো।”

বিএনপির ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতা জানিয়েছেন, অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান গত কয়েক মাস ধরে দলীয় কার্যক্রমে অনিয়মিত ছিলেন এবং নানাভাবে ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করেন। তবে তার এই নতুন রাজনৈতিক পথচলা এবং সিদ্ধান্তের পেছনে স্থানীয় রাজনৈতিক সমীকরণ এবং সাংগঠনিক দ্বন্দ্বও রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিএনপির বার্তা: "শৃঙ্খলা ভঙ্গের প্রশ্নে কোনো ছাড় নয়"

বিএনপি বরাবরই শৃঙ্খলা এবং আদর্শগত অবস্থানকে গুরুত্ব দিয়ে এসেছে বলে দাবি করছে দলটির নেতারা। এক সিনিয়র নেতা বলেন, "দলের সিদ্ধান্ত ও আদর্শের বাইরে কেউ গেলে, তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবেই। অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে।"

ইসলামী আন্দোলনে যোগদানের পটভূমি

এর আগে গত ৬ মে, বরিশালে আনুষ্ঠানিকভাবে চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মো. রেজাউল করিমের হাতে হাত রেখে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগ দেন মোস্তাফিজুর রহমান। সেই অনুষ্ঠানে তাকে "রাজনৈতিক সংস্কারের নতুন প্রতীক" হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। চরমোনাই পীরের ঘনিষ্ঠ সূত্র মতে, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই মোস্তাফিজুর রহমানকে দলে আনার চেষ্টা করছিলেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মন্তব্য

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মোস্তাফিজুর রহমানের দলবদল ও পরবর্তীতে বহিষ্কারের ঘটনা বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। একদিকে বিএনপি তার সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে চাইছে, অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন তার প্রভাব বাড়াতে চাচ্ছে মূলধারার রাজনীতিতে।

 

বহিষ্কার ও দলবদলের এই নাটকীয় ঘটনাটি শুধু একটি ব্যক্তির রাজনৈতিক অবস্থান বদলের প্রশ্ন নয়—এটি বিএনপির ভবিষ্যৎ সাংগঠনিক কৌশল, ইসলামপন্থী দলের ক্রমবর্ধমান সক্রিয়তা এবং দেশের রাজনৈতিক ভারসাম্যের সূক্ষ্ম পরিবর্তনের দিকেও ইঙ্গিত দিচ্ছে। অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের এই সিদ্ধান্ত আগামী জাতীয় রাজনীতিতে কেমন প্রভাব ফেলবে, তা দেখার অপেক্ষায় থাকল পুরো দেশ।

Tidak ada komentar yang ditemukan