close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

চোর ধরতে গিয়ে সংঘর্ষ, অতঃপর

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় গভীর রাতে চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে আটকাতে গিয়ে ঘটে গেল উত্তপ্ত সংঘর্ষ। লোহার রডের আঘাতে আহত হন তিনজন, পাল্টা গণপিটুনিতে আহত চোরও—ঘটনা ঘিরে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য।..

পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার শান্তিপ্রিয় কালাইয়া গ্রাম যেন হঠাৎ করেই পরিণত হয় এক উত্তেজনাপূর্ণ সংঘর্ষের মঞ্চে। গভীর রাতে গ্রামবাসীর তৎপরতায় ধরা পড়ে এক চিহ্নিত চোর, আর তাতেই ঘটে যায় রক্তাক্ত ঘটনা। এতে আহত হয়েছেন অন্তত চারজন।

ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে। স্থানীয়রা জানান, ওই রাতে কালাইয়া গ্রামের নোমরহাট এলাকায় দুইজন অপরিচিত লোককে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। তাদের চলাফেরায় সন্দেহ হলে, গ্রামবাসীরা সতর্ক হয়ে তাদের অনুসরণ করতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে আরও মানুষ জড়ো হলে ওই দুইজনকে ঘিরে ধরার চেষ্টা করা হয়।

স্থানীয়দের ধাওয়ায় একজন দৌড়ে পালিয়ে গেলেও আরেকজন ধরা পড়ে যান। তিনি খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার বাসিন্দা রেজাউল গাজী (৫০)। আটক হওয়ার ভয়ে তিনি সঙ্গে থাকা লোহার রড দিয়ে স্থানীয় তিনজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে আহত হন তন্ময় বিশ্বাস (২৯), গপিনাথ হালদার (৩২) ও প্রমত ঢালী (৫৫)।

আহতদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন এবং উত্তেজনার মধ্যে রেজাউল গাজীকেও ধরে ফেলেন। পরবর্তীতে তাকে গণপিটুনি দেওয়া হয়, যাতে তিনি গুরুতরভাবে আহত হন। পরে স্থানীয়রাই তাকে চিকিৎসার জন্য ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

ঘটনার বিষয়ে ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মারুফ হোসেন জানান, “আটক রেজাউল গাজী একজন চিহ্নিত চোর এবং তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। আমরা তাকে থানায় নিয়ে এসেছি এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”

এ ঘটনার পর কালাইয়া গ্রামে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। রাতের বেলায় টহল বাড়ানো হয়েছে এবং গ্রামবাসী নিজেরাই পাহারার ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সম্প্রতি আশপাশের গ্রামে চুরির প্রবণতা বাড়ায় তারা নিজেরাই সজাগ ছিলেন। এই ঘটনার মাধ্যমে তাদের সেই সতর্কতা সফল হয়েছে বলেও তারা মনে করছেন।

ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে আলোচনা। অনেকেই প্রশংসা করছেন গ্রামবাসীর সাহসিকতার, আবার কেউ কেউ সমালোচনা করছেন আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে।

পিরোজপুরের এ ঘটনাটি প্রমাণ করে, জনসচেতনতা ও তৎপরতা অপরাধ প্রতিরোধে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এও সত্য, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া কোনভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন সংঘর্ষে গড়ায় না, সে বিষয়ে প্রশাসন ও স্থানীয়দের সমন্বিতভাবে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

نظری یافت نشد